কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে সেখানকার শিশুদের শৈশব কার্যত ‘বন্দি’ হয়ে পড়েছে। গত দুই মাসে সেখানে একশ ৪৪ জন শিশুকে আটক করা হয়েছে।
৯ থেকে ১১ বছর বয়সী আটক ওই শিশুদের রাখা হয়েছে বিভিন্ন হোমে। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বিশেষ কমিটিকে এ তথ্য দিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। তবে তাদের কাউকেই বেআইনিভাবে আটক করা হয়নি বলেও সরকারিভাবে দাবি করা হয়েছে।
প্রশাসনের যুক্তি, পাথর নিক্ষেপ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধানো এবং সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি নষ্টে যুক্ত থাকার কারণে তাদের আটক করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং সমাজসেবামূলক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সেখানে দমন-পীড়ন চলছে। সেই দমননীতি থেকে শিশুদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন সমাজকর্মী এনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় এবং শান্তা সিংহ। তাদের অভিযোগ, উপত্যকায় বেআইনিভাবে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আটক করছে নিরাপত্তা রক্ষা বাহিনী।
সমাজকর্মীদের ওই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের জুভেনাইল জাস্টিস কমিটিকে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এনভি রমণ, আর সুভাষ রেড্ডি এবং বিআর গাবাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেয় বিচারপতি আলি মুহাম্মদ মাগ্রের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের ওই কমিটি। তারপরই বিষয়টি সামনে এসেছে।
কমিটির তাদের রিপোর্টে নিজেদের কোনো মতামত পেশ করেনি। শুধু পুলিশের বয়ান উদ্ধৃত করে জমা দিয়েছে। পুলিশের বয়ান অনুযায়ী, বেআইনিভাবে কোনো শিশুকে আটক করা হয়নি। বরং কোনো নাবালক আইন বিরোধী কাজে লিপ্ত রয়েছে বলে জানা গেলে, আইন মেনেই তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। পাথর ছোড়ার জন্য সাময়িকভাবে আটকে রাখা হয় তদের। পরে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ধরনের কিছু ঘটনা ঘটে থাকলেও, সামান্য ব্যাপারকে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হচ্ছে।
কিন্তু এটাই চূড়ান্ত রিপোর্ট নয়। কী অভিযোগে এবং কতজন শিশুকে আটক করা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এডিজি-র কাছে সেই সম্পর্কে সবিস্তার রিপোর্ট চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত ওই কমিটি।
জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদলতে ওই শিশুদের জামিনের কোনো আবেদন জমা পড়েছে কি না, সেটাও জানাতে বলা হয়েছে।