যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চরম উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় পরমাণু অস্ত্র রাখা মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে তুরস্ক।দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান বলেছেন, ‘আমরা প্রয়োজনে ইনকিরলিক (তুরস্কের আদানা প্রদেশের মার্কিন বিমান ঘাঁটি) ও কুরেচিক (তুরস্কের মালাটিয়া প্রদেশে অবস্থিত মার্কিন রাডার স্টেশন) বন্ধ করে দেব’।
ওই দুটি ঘাঁটির মধ্যে একটিতে ৫০টি গ্র্যাভিটি পরমাণু অস্ত্র রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার তুরস্কের একটি টিভি চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে দেশটির প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম হুররিয়াত ডেইলি নিউজ।
তুরস্কের বিরুদ্ধে পাস হওয়া মার্কিন সিনেটের একটি বিলের তীব্র বিরোধিতা করে এরদোগান বলেন, এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এটা দুই দেশের সম্পর্ককে অবনতি ঘটাবে।
ন্যাটোর সমালোচনা করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ন্যাটোর মিটিংয়েও আমি বলেছি, যদি আমরা ন্যাটোর সঙ্গে থাকি, তাহলে আমরা একসঙ্গে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়ব। সেটা কীভাবে করব তা নিয়ে (ন্যাটো) নেতৃবৃন্দ কথা বলুক। প্রথমেই এটি সমাধান হওয়া প্রয়োজন। আইএস ও পিকেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ন্যাটোকে যৌথভাবে মোকাবেলা করার প্রতি আহ্বান জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
গত ৯ অক্টোবর সিরিয়ায় অপারেশন পিস স্প্রিং নামে অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক। তুরস্কের সীমান্ত এলাকাকে নিরাপদ ও সিরিয়ান শরণার্থীদের দেশে প্রত্যাবাসনের লক্ষে ওই হামলা পরিচালনা করছে এরদোগান সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এ বার সরাসরি তোপ দাগলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ৷ জানিয়ে দিলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়ার কাছ থেকে মিসাইল কেনার ক্ষেত্রে তুরস্কের বিরোধিতা করে, তাহলে সে দেশে মার্কিন সেনার দুটি ঘাঁটি তারা বন্ধ করে দেবেন৷
- আ.লীগের সম্মেলন: কমিটিতে স্থান পাবেন ক্লিন ইমেজের নেতারা
- রাজাকার তালিকা: প্রধান প্রসিকিউটরের নাম ওঠায় সমালোচনা
সম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে মিসাইল সিস্টেম কেনার পরিকল্পনা করেছিল তুরস্ক৷ রাশিয়া তা বিক্রি করতে রাজিও হয়েছিল৷ কিন্তু বাদ সাধে আমেরিকা৷ মার্কিন সরকার তুরস্ককে জানিয়ে দেয়, যে মিসাইল সিস্টেম কেনার পরিকল্পনা করছেন এরদোগান, তা ন্যাটোর নিয়ম অনুযায়ী বৈধ সামরিক অস্ত্র নয়৷ ফলে তুরস্ক যদি ওই অস্ত্র কেনে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে আমেরিকা৷
এতেই ক্ষুব্ধ হন এরদোগান৷ তার স্পষ্ট বক্তব্য, রাশিয়ার সঙ্গে মিসাইলের যে চুক্তি তার হয়েছে, তা থেকে তিনি পিছু হটবেন না৷ তাতে আমেরিকা যদি নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাহলে তিনিও তুরস্কে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেবেন৷
মার্কিন যুদ্ধ বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে জার্মান ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়, ওই দুটি সামরিক ঘাঁটি মার্কিন সেনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ, ওই দুটি ঘাঁটি থেকেই আইএস, ইরান ও সিরিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় লড়াই চালায় যুক্তরাষ্ট্র৷ ওই দুটি ঘাঁটির একটিতে আমেরিকা ৫০টি গ্র্যাভিটি পরমাণু অস্ত্রও রেখেছে৷ ফলে এই দুটি ঘাঁটি এরদোগান বন্ধ করে দিলে ব্যাপক সমস্যায় পড়বে ট্রাম্প প্রশাসন৷ বিষয়টি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসেও আলোচনা হয়েছে৷