নিরীক্ষা আপত্তির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার বিষয়ে ‘সালিশে’ (আর্বিট্রেশন) যাওয়ার জন্য দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের একটি ল ফার্মের মাধ্যমে গ্রামীণফোন আমাদের রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিস দিয়েছে আর্বিট্রেশনে (সালিশ) যাওয়ার জন্য।’
এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যবসা করবে একটি প্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিস দিয়ে আর্বিট্রেশনের জন্য চাপ দেবে- এটা বোধহয় খুব সহজে গ্রহণ করার মতো অবস্থা না।’
গ্রামীণফোন ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে তাদের মোবাইল ফোন অপারেটিং কার্যক্রম শুরু করে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা বলে দাবি করে আসছে। আর যেই নিরীক্ষা প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে জিপির কাছে সরকারের পাওনার কথা বলা হচ্ছে সেই নিরীক্ষাটিই ভিত্তিহীন বলে দাবি করে আসছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিটি।
এই টাকা আদায়ে সবশেষ গত এপ্রিল মাসে জিপিকে চিঠি দিয়েছিল বিটিআরসি। তবে তাতে কাজ না হওয়ায় তাদের ওপর আরোপ করা হয় কড়াকড়ি। আরেক মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রবির কাছে পাওনা ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার বেলায়ও বিটিআরসি একই পদক্ষেপ নেয়।
বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির কর্মকর্তাদের নিয়ে দুই দফা বৈঠকও করেন। কিন্তু তাতেও সমাধান আসেনি।
- আগামীকাল আ’লীগের সম্মেলন : নেতৃত্বে ব্যাপক রদবদলের আভাস
- নাগরিকত্ব আইন: ভারতে বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা
সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তিতে বিটিআরসি রাজি না হওয়ায় এই দুই অপারেটর আদালতের দ্বারস্ত হয়। গত ২৪ নভেম্বর গ্রামীণফোনকে অবিলম্বে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আর রবির নিরীক্ষা আপত্তির বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারধীন। তার মধ্যেই রাষ্ট্রপতিকে জিপির উকিল নোটিসের কথা জানালেন মন্ত্রী।
এ বিষয়ে সরকার কী পদক্ষেপ নেবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘যে নোটিস দেওয়া হয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত অবহিত করা আছে। সবাই বিষয়টাকে জানে। এই উকিল নোটিস নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
‘তারা যে জায়গায় চাচ্ছে, সে জায়গাটা হচ্ছে আর্বিট্রেশন যেন করা হয়। আর্বিট্রেশন করার জায়গায় আমরা উম্মুক্ত আছি…আদালত যদি হুকুম দেয় আর্বিট্রেশন করার, তাহলে করতে পারব।’
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘যে দেশে বিজনেস করে সে দেশের আইন আদালত অমান্য করে দুনিয়ার কোনো জায়গায় গিয়ে অন্য বিচার পাওয়ার সম্ভবনা নাই।