সফল সংগীতজীবন সামিনা চৌধুরীর। জনপ্রিয়তা পেয়েছে তাঁর বহু গান। বাঙালির হৃদয়ে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে তাঁর কণ্ঠে ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসত’ গানটি। তারপরও কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মাহমুদুন্নবীর এই কন্যার একটি বড় দুঃখ রয়েছে। সংগীতচর্চা শুরুর পর বাবাকে বেশি দিন কাছে পাননি তিনি। পেলে তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছুই নিতে পারতেন। সেই আক্ষেপ তাঁর সারা জীবনের।
সামিনা চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাড়িতে বাবাকে গাইতে শুনতাম। কিন্তু নিজে যখন সংগীতচর্চা শুরু করি, তত দিনে বাবা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একসময় চলেও যান। মাত্র দুই বছর তাঁকে পেয়েছিলাম। তবে এরই মধ্যে তাঁর প্রতিভার ছোঁয়ায় উদ্ভাসিত হয়েছিল আমাদের জীবন।’
মাহমুদুন্নবীর নির্বাচিত ১০টি গান নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে নতুন একটি অ্যালবাম ‘আমার গানের প্রান্তে’। অ্যালবামের পাঁচটি করে গানে কণ্ঠ দিয়েছেন দুই বোন সামিনা চৌধুরী ও ফাহমিদা নবী। ঈদ উপলক্ষে অ্যালবামটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।
আধুনিক বাংলা ও চলচিত্রের গানে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছিলেন জনপ্রিয় শিল্পী মাহমুদুন্নবী। ‘আমার গানের প্রান্তে’ অ্যালবামে সংকলিত হয়েছে তাঁর ‘মনে মনে যে কথা’, ‘তুমি কখন এসে দাঁড়িয়ে আছ’, ‘তোমার দুহাত দিয়ে অন্ধ করে দাও’, ‘বড় একা একা লাগে’, ‘ওগো মোর মধুমিতা’, ‘আমি আগুনকে ভয় পাই না’, ‘অনেক সেধেছি সুর’, ‘তুমি যে আমার কবিতা’, ‘দিয়েছি মায়ের স্নেহ’ ও ‘সুরের ভুবনে আমি আজও পথচারী’ গানগুলো।
এই অ্যালবাম প্রসঙ্গে শিল্পী ফাহমিদা নবী লিখেছেন, ‘মাহমুদুন্নবীর গান গাওয়া অনেক বড় দায়িত্বের ব্যাপার। তার ওপর তিনি আমার বাবা। তাঁর প্রতি ভক্তকুলের ভালোবাসা অন্য রকম। সংগীত অঙ্গনের বড়রা এখনো বলেন, তোমার বাবার মতো কণ্ঠ আজও পেলাম না! তিনি বড় ভালো মানুষ ছিলেন। তাঁর প্রতিটি গান শ্রোতার হৃদয়ে পরম ভালোবাসায় লালিত। এমনকি নতুন প্রজন্মের কাছেও নতুন করে বারবার তিনি ফিরে আসেন তাঁর কণ্ঠের মাধুরীতে। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের এই শ্রদ্ধা নিবেদনকে সম্মান জানাই। তাদের জন্য আমরা দুই বোন বাবার কিছু গান শ্রোতার কাছে তুলে দিলাম। বাবার মতো গাইতে পারিনি, চেষ্টা করেছি মাত্র।’
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিভিন্ন বই ও সিডির বিক্রয়কেন্দ্রে অ্যালবামটি পাওয়া যাবে।