প্রকৃতিতে বসন্ত। ফাগুনের আগুন আর ভালোবাসার স্পর্শে বর্ণিল হয়ে উঠেছিল বইমেলা। শুক্রবার হলুদ আর লালরঙা বইপ্রেমীদের উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল রাত পর্যন্ত। শুধু আনন্দ উদযাপনে নয় বেড়েছে বিক্রি।
ইত্যাদি প্রকাশনীর প্রকাশক আদিত্য অন্তর বলেন, ছুটির দিন ভালোবাসা ও বসন্ত তিনে মিলে মেলার স্বাভাবিক অবস্থার চাইতে অনেক বেশি ক্রেতা যেমন ছিল বেড়েছে বিক্রিও। এখন অপেক্ষা আর একটি ছুটির দিন এবং একুশে ফেব্রুয়ারি।
ঝিঙেফুল প্রকাশনীর প্রকাশক গিয়াস উদ্দিন খান বলেন, শিশুপ্রহর দিয়ে মেলা শুরু হলেও রাত অব্দি বিক্রি হয়েছে।
পুরো মেলা যেন এক উৎসবের রূপ নিয়েছিল। শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে প্রায় সর্বত্রই। উৎসবে নিরাপদ ছিল বইপ্রেমীরা।
শিশুরা মেতেছিল তৃতীয় শিশুপ্রহরে। শিশু চত্বর যেন কলকাকলিতে মুখর হয়েছিল কোকিলের কুহুতানের সঙ্গে। প্রিয় বই কিনে বাড়ি ফিরেছে তারা। যোগ দিয়েছে সমবয়সীদের সঙ্গে আনন্দের। সেজেছে লাল আর হলুদ রঙের কাপড়ে।
ফাগুনের প্রথম দিনে যুগলদের বইপ্রেমী উচ্ছল হয়েছিল বইমেলা। প্রিয়জনকে পছন্দের বই উপহার সুন্দর স্মৃতিটুকু জমিয়ে রাখতে ছবি তুলতে দেখা গেছে প্রায় প্রত্যেককেই।
নতুন বই
মেলায় নতুন বই এসেছে ৩৬৯টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- বাংলা একাডেমি এনেছে আসাদ চৌধুরীর গ্রন্থ ‘সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু’, গ্রন্থকুটির এনেছে কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর ‘আমার পা-ব’, শিশু গ্রন্থ কুটির এনেছে ‘একে চন্দ্র দুয়ে পক্ষ’, অনুপম প্রকাশনী এনেছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘ছোট একটা নেংটি ইঁদুর’, আনিসুল হকের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’, কথা প্রকাশ এনেছে ইমদাদুল হক মিলনের ‘বাড়িটায় কে যেন থাকে’, সালেক খোকনের ‘দেশে বেড়াই’, আগামী প্রকাশনী এনেছে মোহাম্মদ হাননানের ‘শতাব্দীর বঙ্গবন্ধু’, দ্বৈ প্রকাশ এনেছে সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া’, নির্মলেন্দু গুণের ‘নির্বাচিত ছড়া’, ফরিদুর রেজ সাগরের ‘মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প’, আলী ইমামের ‘বিজ্ঞাসের কল্পকাহিনি’ প্রভৃতি।
মূলমঞ্চের আয়োজন
গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় আসাদ চৌধুরী রচিত সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শোয়াইব জিবরান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আনিসুর রহমান এবং নূরুন্নাহার মুক্তা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক খুরশীদা বেগম।
কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, সাজ্জাদ আরেফিন, তারিক সুজাত এবং সুহিতা সুলতানা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আহ্কাম উল্লাহ, সায়েরা হাবীব এবং নাজনীন নাজ। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম, তানভীর সজীব আলম, তানজিনা করিম স্বরলিপি, মুর্শিদ আনোয়ার, রাজিয়া সুলতানা এবং শরণ বড়ুয়া।
শুক্রবার লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন ফরিদ কবির, মাহবুব আজীজ, আফরোজা সোমা এবং চৌধুরী শহীদ কাদের।