সাহেদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের কাছে ১৬০ অভিযোগ

মত ও পথ প্রতিবেদক

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ
রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ। ফাইল ছবি

র‌্যাব করোনা পরীক্ষার নামে জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগে গ্রেপ্তার রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে ১৬০টি অভিযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চাকরির আশ্বাসে অর্থ আত্মসাৎ, বদলি তদবির, রিকশা-ভ্যানের ভুয়া লাইসেন্স প্রদান, পদ্মা সেতু প্রকল্পে পাথর-বালু, বিটুমিন সাপ্লাইয়ের নামে প্রতারণা। সবশেষ জেল থেকে হাজতি ছাড়াতেও বিভিন্নজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন আলোচিত এই প্রতারক।

পাঁচ দিনে (শনিবার থেকে বুধবার) র‌্যাবের খোলা হটলাইন নম্বরে এসব অভিযোগ আসে। বৃহস্পতিবার রাতে এলিট ফোর্সটির মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘করোনা পরীক্ষার নামে প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের নামে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করে র‌্যাব। এই মামলায় ১৭ জনকে আসামি করা হয়। যাদের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

‘এই প্রতারকের অভিনব সব প্রতারণার তথ্য জানাতে র‌্যাব একটি হটলাইন নম্বর ও ইমেইল চালু করে। গতকাল সেটা বন্ধ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৬০টি অভিযোগ আমরা পেয়েছি, যারমধ্যে ফোন কলের মাধ্যমে অভিযোগ এসেছে ১৩৯টি। আর বাকি অভিযোগ ইমেইলের মাধ্যমে এসেছে।’

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সাহেদের সাড়ে ১২ কোটি টাকা আর্থিক দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য আমরা পেয়েছি। এর বাইরেরও তার বিরুদ্ধে ৪৮টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে।

তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজনে এসব মামলার বিষয় আমলে নেবেন বলে জানান র‌্যাব মুখপাত্র।

গত ৬ জুলাই রাজধানীর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। করোনার এই দুর্যোগকালে নমুনা সংগ্রহ করা হলেও টেস্ট না করে ফলাফল দেয়া, হাসপাতাল পরিচালনার সনদের মেয়াদ না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া যায়। পরদিন হাসপাতালটির উত্তরা ও মিরপুরের দুটি শাখা সিলগালা এবং সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র‌্যাব। মামলার পর সাহেদ ঢাকা থেকে পালিয়ে যান। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে সবশেষ সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন।

১৫ জুলাই ভোরে ভারতে পালানোর প্রস্তুতির সময় সাহেদকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাকে নিয়ে উত্তরায় তার অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় সাহেদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানা ও সাতক্ষীরায় পৃথক মামলা হয়।

এদিকে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে করা মামলাটি উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবিকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে সাহেদ ও রিজেন্টের এমডি মাসুদ পারভেজকে গ্রেপ্তারের পর ওই দিনই তাদেরকে ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। গোয়েন্দা সংস্থাটি তাদের দুজনকে আদালতে উপস্থাপন করে রিমান্ড চাইলে আদালত দশ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। বর্তমানে সেই মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে সাহেদকে র‌্যাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ তাকে র‌্যাব হেফাজতে নেয়া হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে