মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গারা এক ছাদখোলা উন্মুক্ত কারাগারে বসবাস করছেন বলে বিশেষ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ- এইচআরডব্লিউ।
মিয়ানমারে এখনও থাকা এক লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা আদিবাসী নোংরা ও বাজে পরিস্থিতিতে মানবেতর জীবনযাপন করছে বলে জানায় এইচআরডব্লিউ। আলজাজিরা।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, আট বছর ধরে নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠী রোহিঙ্গার এক লাখ ৩০ হাজার সদস্যকে অমানবিক পরিবেশে বন্দি ক্যাম্পের মতো জায়গায় রেখেছে। নিজেদের
বাস্তুভিটা, ঘরবাড়ি ও আত্মীয়স্বজনহীন পরিবেশে থেকেও নানা নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয় রোহিঙ্গাদের। ফলে সহায়-সম্বলহীন রোহিঙ্গারা নিজেদের মাতৃভূমিতে অন্তত কিছুটা ভালো পরিবেশ ও ভালো আচরণের প্রত্যাশা করেন।
রোহিঙ্গা মুসলিম নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বেশিরভাগ সদস্যকে নির্যাতন, নিপীড়ন ও জাতিগত নিধনের মাধ্যমে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমার। তাদের বেশিরভাগ এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে শরণার্থী ক্যাম্পে। বাকি যেসব রোহিঙ্গা এখনও মিয়ানমারে রয়ে গেছেন, তাদেরও রাখাইন রাজ্যে শরণার্থী ক্যাম্পের মতো বিভিন্ন ক্যাম্পে আকটে রেখেছে। এগুলোর পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর এবং অনেকটা উন্মুক্ত কারাগারের মতো। এ রকম অনির্ধারিত সময়ের বন্দিত্ব থেকে তাদের মুক্তি দেয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
শত শত বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাসকারী ও জন্মসূত্রে মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন অভিযান শুরু করে মিয়ানমার। ওই বছর অন্তত ১০ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বাকি যারা সেখানে রয়ে গেছেন, তাদের বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক রেখে নানামুখী নির্যাতন করা হচ্ছে।
এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনটির লেখক শায়না বাউচনার বলেন, আট বছর ধরে এই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবেতন আচরণ করে যাচ্ছে মিয়ানমার। তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। তাদের ভূমি, ঘরবাড়ি ধ্বংস করে জীবিকার পথ বন্ধ করে দিয়ে আটকে রেখেছে। বিশ্বের উচিত নয় রোহিঙ্গাদের বিষয় ভুলে যাওয়া।