দেশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সরকার। এই পর্বে প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
আজ সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ( ডিপিই) অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
ডিপিই থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্বখাতভুক্ত ‘সহকারী শিক্ষক’ এর শূন্যপদ এবং জাতীয়করণ করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিডিইপি-৪ এর আওতায় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য রাজস্বখাতে সৃষ্ট ‘সহকারী শিক্ষক’ পদে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর ১৩তম গ্রেডে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হবে। তবে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের প্রার্থীরা এতে আবেদন করতে পারবেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। শেষ হবে ২৪ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন হবে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর গ্রেড ১৩ অনুযায়ী ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ-সহ স্নাতক বা সম্মান বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।
অনুযায়ী প্রার্থীর বয়সসীমা ২০ অক্টোবর তারিখে বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সর্বোচ্চ ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, শারীরিক প্রতিবন্ধী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চ ৩২ বছর। প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ সম্মান বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।
আগ্রহী প্রার্থীদের http://dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণের নির্দেশনা পাওয়া যাবে। ওই নির্দেশনা অনুসরণ করে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করে সাবমিট করা হলে ওয়েবসাইট থেকে ইউজার আইডিসহ আনপেইড স্ট্যাটাসসম্পন্ন ড্রাফট অ্যাপলিকেশনের কপি তৈরি করে বা প্রিন্ট করে আবেদনের প্রদত্ত তথ্য যাচাই করতে হবে। আবেদন ফি জমাদানের আগে ড্রাফট অ্যাপলিকেশনের কপি একাধিকবার পড়ে প্রার্থী তার প্রদত্ত তথ্যের যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হবে। কোনো ভুল পরিলক্ষিত হলে তার বিপরীতে আবেদন ফি জমা দেয়া যাবে না এবং এই বিজ্ঞপ্তির ৩ নম্বর শর্ত অনুচ্ছেদ অনুসরণ করে নতুন করে অ্যাপলিকেশন ফরম সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করে নতুন ইউজার আইডি সংবলিত আনপেইড স্ট্যাটাসসম্পন্ন অ্যাপ্লিক্যান্টস কপি প্রিন্ট নিয়ে পুনরায় প্রদত্ত তথ্য যাচাই করতে হবে।
নির্ভুলভাবে পূরণকৃত আবেদন ফরমের বিপরীতে প্রদত্ত ইউজার আইডি ব্যবহার করে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ড্রাফট অ্যাপ্লিকেন্স কপিতে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করে যেকোনও টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএস-এর মাধ্যমে অফেরতযোগ্য ১০০ টাকা আবেদন ফি এবং টেলিটকের ১০ টাকাসহ মোট ১১০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। আবেদন ফি পরিশোধের পর আবেদনে দেয়া মোবাইল নম্বরে এসএমএস-এর মাধ্যমে আবেদনকারীকে ইউজার আইডিসহ একটি পাসওয়ার্ড দেয়া হবে। এরপর http://dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটের ডাউনলোড অ্যাপ্লিকেন্টস কপি ট্যাবে ক্লিক করে মোবাইলে পাওয়া ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সাবমিট করে পেইড (paid) স্ট্যাটাসসম্পন্ন ফাইনাল অ্যাপ্লিকেন্টস কপি পাওয়া যাবে। যা প্রিন্ট করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার শেষ অবধি আবশ্যিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। কেবল আবেদন ফি পরিশোধের পর আবেদনটি চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়েছে বলে গণ্য হবে। এরপর আবেদনের আর কোনো তথ্য সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন বা একই প্রার্থীর নতুনভাবে অ্যাপ্লিকেশন ফরম পূরণের সুযোগ থাকবে না।
২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক লাখ ৯৭ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মুজিববর্ষে সব শূন্যপদে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হয়নি।
সবশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে মোট উত্তীর্ণ হন ৫৫ হাজার ২৯৫ জন, নিয়োগ দেয়া হয় ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে। এর আগে একই বছর ২০১৪ সালের স্থগিত পরীক্ষাটিও নেয়া হয়। ওই পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হন ২৯ হাজার ৫৫৫ প্রার্থী। এর মধ্যে নিয়োগ দেয়া হয় ৯ হাজার ৭৬৭ জনকে। এ দুই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত নির্বাচিত হননি ৫৬ হাজার ৯৩৬ প্রার্থী। উত্তীর্ণ এসব প্রার্থী ২০১০-২০১১ সালের মতো প্যানেল নিয়োগ চান। এই দাবিতে তারা আন্দোলনও করছেন। এর মধ্যেই নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলো।