জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের হস্তান্তর আটকে দিল যুক্তরাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

দুনিয়া কাঁপানো ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর আটকে দিয়েছে যুক্তরাজ্য। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে কিনা সে বিষয়ে সোমবার রায় ঘোষণা করেছে লন্ডনের একটি আদালত। খবর বিবিসির।

অ্যাসাঞ্জের বর্তমান মানসিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করেই এই রায় দেওয়া হয়েছে। তাকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হলে তিনি হয়তো আত্মহত্যা করে বসতে পারে এমন আশঙ্কা ছিল। ২০১০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত লক্ষাধিক গোপন নথি অনলাইনে ফাঁস করে দেয়ায় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বর্তমানে ব্রিটেনে বন্দী আছেন ৪৯ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এসব নথি ফাঁস করে আইন ভঙ্গ করেছে অ্যাসাঞ্জ। অপরদিকে অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, তার মামলা নিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা হয়েছে।

জেলা জজ ভেনেসা ব্যারাইস্টার সোমবার সকাল ১০টায় ওল্ড বেইলি আদালতে আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮টি অভিযোগ রয়েছে। আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন হামলার বিস্তারিত তথ্যের পাঁচ লাখ ফাইল প্রকাশ করায় তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো আনা হয়।

অস্ট্রেলীয় এই প্রকাশককে ঘিরে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা আন্তর্জাতিক আইনি বিতর্কের পর অবশেষে হস্তান্তরের রায় এলো। ব্রিটেনের রায়ের আগে জার্মানি ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মানবাধিকার ও মানবিক সমস্যাগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

দক্ষিণপূর্ব লন্ডনের একটি উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগারে অ্যাসাঞ্জ বন্দী রয়েছেন। সেখানে কয়েকজন বন্দীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। অ্যাসাঞ্জ শ্বাসঃপ্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছেন, তাই করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ঝুঁকি তার আরও বেশি।

এর আগে অ্যাসাঞ্জকে ক্ষমা করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে আহ্বান জানান জাতিসংঘের নির্যাতন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি নিলস মেলজার। গত ডিসেম্বরে তিনি লেখেন, ‘অ্যাসাঞ্জকে ক্ষমার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট আপনি আমেরিকা ও বিশ্বের জনগণের কাছে মানবিকতা, সত্য ও ন্যায়ের বার্তা পাঠান।’

সোমবার বিচারের সময় নীল রংয়ের স্যুট এবং সবুজ মাস্ক পরে ছিলেন অ্যাসাঞ্জ। বিচারক যখন তার রায় দেন তখন তিনি চোখ বন্ধ করে ছিলেন। এ সময় আদলতে তার বাগদত্তা স্টেলা মোরিস, উইকিলিসের এডিটর ইন চীফ ক্রিসটিন হ্রাফসন উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন