গত এক সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে তেল, চিনি, ডাল, আটা, ময়দাসহ ১০টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বিপরীতে চাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ ৭টি পণ্যের দাম কমেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বংলাদেশ (টিসিবি)-এর প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ানবাজার, বাদামতলী, সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভীবাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে শনিবার (২০ মার্চ) এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে টিসিবি।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি লিটার ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলের ১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং বোতলের ৫ লিটার সয়াবিন তেলের দাম দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে ৬১০ থেকে ৬৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খোলা পাম অয়েলের দাম ৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেড়ে ১০৭ থেকে ১১২ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। আর ১০৫ থেকে ১১০ টাকা লিটার বিক্রি হওয়া সুপার পাম অয়েলের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১২ থেকে ১১৫ টাকায়। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্যাকেট আটার দাম গত এক সপ্তাহে ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়ে প্রতিকেজি ৩৩ থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা ময়দার দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এতে এই পণ্যটির কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায়।
টিসিবি আরও জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে মাঝারি দানার মশুর ডালের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। এতে এখন মাঝারি দানার মশুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। আমদানি করা আদার দাম এক সপ্তাহে ৫ দশমকি ৫৬ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে।
দাম বাড়ার তালিকায় আরও রয়েছে দেশি শুকনা মরিচ, লবঙ্গ, ব্রয়লার ও দেশি মুরগি, চিনি, গুঁড়া দুধ। দেশি শুকনা মরিচের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে কেজি ১৯০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেড়ে লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগির দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এতে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকায়। আর দেশি মুরগির দাম ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে প্রতিকেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে ভোগানো চিনির দাম গত এক সপ্তাহে আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে টিসিবি। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহে ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা। এর সঙ্গে ডানো গুঁড়া দুধের দাম দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে ৬১০ থেকে ৬৩০ টাকা এবং মার্কস গুঁড়া দুধ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে কেজি ৫৬০ থেকে ৫৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ৫২ থেকে ৫৮ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম গত এক সপ্তাহে ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে ৫০ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে টিসিবি। মাঝারি মানের চালের সঙ্গে কমেছে মোটা চালের দামও। মোটা চালের দাম ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৬ থেকে ৫০ টাকা।
চালের পাশাপাশি গত এক সপ্তাহে কমেছে দেশি পেঁয়াজ, দেশি ও আমদানি করা রসুন, দেশি আদা, ধনে ও তেজপাতার দাম। এর মধ্যে সব থেকে বেশি কমেছে পেঁয়াজের দাম। মানভেদে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছে টিসিবি।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে দেশি রসুনের দাম কমেছে ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এতে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আর আমদানি করা রসুনের দাম ১২ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, যা আগে ছিল ১১০ থেকে ১৪০ টাকা।
এছাড়া দেশি আদার দাম ১১ দশমকি ১১ শতাংশ কমে কেজি ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আমদানি করা শুকনা মরিচের দাম কমেছে ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এতে প্রতিকেজি আমদানি করা শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৬০ টাকার মধ্যে, যা আগে ছিল ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা। ধনের দাম ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে প্রতিকেজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর তেজপাতার ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ দাম কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।