আইয়ুব আলী। পড়াশোনায় মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে না পারলেও রপ্ত করেছেন প্রতারণার বহুমাত্রিক কৌশল। তিনি মূলত পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। কিন্তু মোটা অংকের বেতন দিয়ে রেখেছেন একজন ব্যক্তিগত সহকারীও। কথায় কথায় পুলিশ প্রশাসনকে হুমকি দিতেন।
প্রধানমন্ত্রীর ‘বিশেষ সহকারী’ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রতারণা চালিয়ে যাওয়া আইয়ুব আলী অবশেষে গোয়েন্দাদের জালে সহযোগীসহ ধরা পড়েছেন। এরপরই বেরিয়ে আসে তার প্রতারণার ইতিহাস।
নিয়োগ, বদলি, ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা ধরনের তদবিরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক প্রটোকল অফিসারের ভুয়া সিল-স্বাক্ষর ব্যবহার করতেন আইয়ুব আলী। মাঝে মাঝে নিজেকে ওই প্রটোকল অফিসারের ছেলে হিসেবেও পরিচয় দিতেন।
এমনকি নিজে আড়ালে থেকে সহকারীকে পাঠাতেন বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কার্যালয়ে। এরপর ফোনে বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে কাজ ভাগিয়ে নিতেন। তার এমন প্রতারণার জাল থেকে বাদ যায়নি রাজউকের বড় কর্তারাও।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, নিয়োগের কথা বলে, বদলির কথা বলে, রাজউক এবং গৃহায়নের দপ্তরের ফাইল ছাড়িয়ে দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্র। আসলে তারা কেউই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের কোনো ধরনের কর্মকর্তা বা কর্মচারী নয়। তারা অশিক্ষিত দালাল, প্রতারক। মূলত বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে তারা প্রতারণা করে আসছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, দেশে বিভিন্ন শিক্ষিত-অশিক্ষিত মানুষেরা প্রতারণাকে একটা শিল্পে রূপান্তর করেছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তারাও অন্যায়ভাবে অযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাওয়ার জন্য, অন্যাভাবে জায়গা বা ফ্ল্যাট দখলের জন্য, বদলির জন্য এসব দালালের দ্বারস্থ হই। আর দালালেরাও সেই সুযোগটা নেয়। কখনো সফল হয়, আবার কখনো মানুষের সঙ্গে কাজ করে দেয়ার নামে ঘোরায়।