কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ড. মীর ফখরুজ্জামানের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার ও বৃত্তি!

রুদ্র সাইফুল

ছবির বিবরণ: উপরের ছবি- ১৯৭১ সালে ঢাকার ইসলামিক একাডেমি মিলনায়তনে পাকিস্তান ইসলামি ছাত্র সংঘ আয়োজিত সিরাত সিম্পোজিয়ামে ভাষণ দিচ্ছেন অনুষ্ঠানের সভাপতি কাজী দীন মোহাম্মদ, গোলাম আযম, মাওলানা আবদুর রহীম, মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, মতিউর রহমান নিজামী ও মীর ফখরুজ্জামান (গোল চিহ্নিত)। ছবিটি দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল। নিচের ছবিটি মনোবিজ্ঞান বিভাগের গবেষণাগারের।

কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী ড. মীর ফখরুজ্জামানের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের গবেষণাগার!!!

ড. মীর ফখরুজ্জামান, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শান্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলো। জেনারেল রাও ফরমান আলীর ঘনিষ্ট সহচর এই ড. মীর ফখরুজ্জামান ফজলুল হক হলের প্রভোস্ট ছিলো। জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব হত্যাকাণ্ডের পর ফখরুজ্জামানকে জগন্নাথ হলের প্রভোস্টের দায়িত্বও দেওয়া হলে সে হলের নাম পাল্টে মুসলিম নামকরণের প্রস্তাব করেছিলো।

universel cardiac hospital

সপ্তম নৌবহর প্রেরণের খবর পেয়ে গরু জবাই করে কাঙ্গালিভোজের আয়োজন করা এই কুলাঙ্গার গভর্নর আবদুল মুত্তালিব মালিকের প্রতিরক্ষা তহবিলের জন্যে শিক্ষকদের থেকে বাধ্যতামূলক চাঁদা আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। মনোবিজ্ঞান বিভাগের যেসব শিক্ষক স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পূর্বে ফখরুজ্জামান তাঁদেরকে টেলিগ্রাম করে ক্যাম্পাসে ফিরতে বলে। রাও ফরমান আলীকে ফজলুল হক হলের স্বাধীনতাকামী শিক্ষক ও ছাত্রদের নামের তালিকাও সরবরাহ করে গণহত্যায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে এই যুদ্ধাপরাধী শিক্ষক ড. মীর ফখরুজ্জামান।

রুদ্র সাইফুলের ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া

স্বাধীনতার পর অন্যান্য দালাল শিক্ষকদের পাশাপাশি এই দালালকেও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কিন্তু অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়, এই দালালের নামে ঘৃণাস্তম্ভ তৈরির পরিবর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৯৯৩ সাল থেকে মনোবিজ্ঞান বিভাগের একটি গবেষণাগারের নামকরণ করে রেখেছে। পাশাপাশি, বিভাগে একটি বৃত্তিও চালু রেখেছে এই কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর নামে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদদের প্রতি চরম অবমাননা করছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে প্রজন্মের মাঝে ভুল ধারণা সৃষ্টি করছে।

স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক খালেদা সরকারের অপকর্মের দায় এখনো কেনো আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে? স্বাধীনতা যুদ্ধে অজস্র শহীদের এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন লজ্জা আর কতদিন বহন করতে হবে? আমাদের প্রগতিশীল পরিচয় দেওয়া শিক্ষকবৃন্দ কি লজ্জিত হন না এটি দেখে? আমাদের প্রগতিশীল প্রশাসন কেনো এই লজ্জা স্থায়ী করে রেখেছে? আমরা এর শেষ দেখতে চাই।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে