মাঝে মাঝে দেশটাতে জানোয়ার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে : ড. কামাল

ডেস্ক রিপোর্ট

ড. কামাল হোসেন বলেন, মাঝে মাঝে এই সুন্দর দেশটাতে একেকটা জানোয়ার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আমি অবাক হয়ে যাই, দেশটাকে কি সুন্দরবন বানাতে চাইছে নাকি? সুন্দরবনকেও অপমান করা হয়, সেটা তো জঙ্গল, জংলিরা থাকে, জানোয়াররা থাকে। এদেশে প্রথমবার জানোয়ার দেখছি না, আগেও জানোয়ার দেখেছি।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

জামিনযোগ্য মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন কারাগারে কেন আইনমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, আপনি একজন আইনজীবী, আপনার বাবা মরহুম সিরাজুল ইসলাম একজন স্বনামধন্য আইনজীবী ছিলেন। আপনার কাছ থেকে মানুষ এসব আশা করে না। আপনি সংবিধান পড়ুন, আইনের বই পড়ুন। আপনি ভালো করে জানেন মানহানির মামলা জামিনযোগ্য অপরাধ, তারপরও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কেন কারাগারে নেয়া হলো?

ড. কামাল বলেন, সরকার কেন এসব করছে। আমি মনে করি মাথা খারাপ হয়ে গেছে। দেশ শাসন করার সময় যাদের মাথা খারাপ হয়ে যায় তাদের মানসিক সুস্থতা পরীক্ষা করতে হয়। সাইকিয়াট্রিস্টদের বোর্ড গঠন করে পরীক্ষা করা হোক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বয়স ৪৭ বছর পার হয়েছে। আর তিন বছর পরে স্বাধীনতার ৫০ বছর হবে। আমার ৮০ বছর হয়েছে। এই ৮০ বছর বয়সে আমি মনে করি সবচেয়ে বড় শাস্তি হলো, আমাকে এগুলো দেখতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখন দেশে যা ঘটছে সংবিধানের কোথায় তা লেখা আছে? আমি সিলেটে যা দেখেছি, অবাক কাণ্ড। সমাবেশে বক্তৃতা দেয়া লোককেও সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের মেরে ফেলতে পার। আমরা ভয়ে ভীত না। এ দেশের ১৬ কোটি মানুষ ভীত নয়।

এরশাদের পতনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ দেশের মানুষের একটা ঐতিহ্য আছে। অন্যায় অসহ্য হয়ে গেলে মানুষ তা রুখে দাঁড়ায়, প্রতিহত করে।

সভায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার জাতীয় ঐকফ্রন্ট গঠনের পর সরকার বিচলিত হয়ে পড়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে ঐক্যফ্রন্ট থাকলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। গ্রাম পর্যন্ত ঐক্য হয়ে গেছে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ঐক্যফ্রন্টে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। রাজনীতিবিদরা জেলে যাবেন এটা অস্বাভাবিক নয়। জামিনযোগ্য মামলায় তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, নিতাই রায় চৌধুরী, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সানাউল্লাহ মিয়া, সুব্রত চৌধুরী, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, গোলাম মোস্তফা খান প্রমুখ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- বদরুদ্দোজা বাদল, আবদুর রাজ্জাক খান, মহসিন মিয়া, ইকবাল হোসেন, গোলাম রহমান ভুইয়া, গোলাম মোস্তাফা, গাজী কামরুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন, ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান, কাজী জয়নাল, মির্জা আল মাহমুদ, মো. ফারুক হোসেন, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলাল, সগীর হোসেন লিয়ন, শরীফ ইউ আহমেদ, শেখ তাহসীন আলী, মাহবুবুর রহমান ও ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহার ও কারামুক্তি, ব্যারিস্টার মইনুলের কারামুক্তি এবং তারেক রহমানের সাজা বাতিলসহ ৭টি দাবি তুলে ধরেন। আগামীতে মহাসমাবেশ করার ঘোষণাও দেন তিনি। আলোচনা সভায় বিপুলসংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে