বাংলাদেশি হজযাত্রীদের সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দরের পরিবর্তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে সৌদি প্রতিনিধি দল।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ঢাকায় সফররত সৌদি আরবের ডাইরেক্টর জেনারেল (পাসপোর্ট) মেজর জেনারেল সোলাইমান আব্দুল আজিজ ইয়াহ ইয়াহর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ সম্মতির কথা জানান।
চলতি বছর পবিত্র হজ পালনে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজারসহ ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মোট হজযাত্রীর শতকরা ৫০ ভাগ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও অবশিষ্ট ৫০ ভাগ সৌদি এয়ারলাইন্স পরিবহন করবে।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানান, প্রি-অ্যারাইবেল ইমিগ্রেশন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি বৃহস্পতিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আশকোনা হজক্যাম্প পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই সৌদি অংশের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম করা সম্ভব বলে জানান।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চলতি বছর পবিত্র হজ পালনে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজারসহ ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মোট হজযাত্রীর শতকরা ৫০ ভাগ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও অবশিষ্ট ৫০ ভাগ সৌদি এয়ারলাইন্স পরিবহন করবে।
প্রচলিত রীতি অনুসারে বাংলাদেশ বিমানের যাত্রীরা আশকোনা হজক্যাম্পে ও সৌদি এয়ারলাইন্সের যাত্রীরা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেন। আসন্ন হজেও একই নিয়মে তারা আশকোনা হজক্যাম্প ও শাহজালালে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করবেন।
এরপর উভয় বিমানের হজযাত্রীদের শাহজালাল বিমানবন্দরের একটি এক্সক্লুসিভ জোনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাদের সৌদি আরবের জেদ্দায় যে ইমিগ্রেশনের কাজ হতো সেই কাজটি (ফিঙ্গার প্রিন্ট সংগ্রহ ও মিলিয়ে দেখা) ওই এক্সক্লুসিভ জোনে সম্পন্ন করা হবে অর্থাৎ সৌদি আরব অংশের ইমিগ্রেশনের কাজ ওইখানে সম্পন্ন করে হজযাত্রীরা স্ব স্ব বিমানে আরোহণ করে যাত্রা করবেন। এক্সক্লুসিভ জোনের সব কার্যক্রম থাকবে সৌদি আরবের টেকনিক্যাল দলের হাতে। ফলে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জেদ্দা বিমানবন্দরে ৬-৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করার বিড়ম্বনা লাঘব হবে।
আট বিভাগে সব হজযাত্রীর দশ আঙুলের হাতের ছাপ সংগ্রহ করা হবে: বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য আসন্ন হজে হজ-ভিসার জন্য দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা দেয়ার আগেই দেশের আট বিভাগে প্রত্যেক হজযাত্রীর দশ আঙুলের হাতের ছাপ সংগ্রহ করা হবে। ফলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সৌদি কর্তৃপক্ষের ইমিগ্রেশন কাজ সহজ হবে।
সৌজন্য সাক্ষাতে সৌদি প্রতিনিধি দলে অংশগ্রহণ করেন সৌদি আরবের ডাইরেক্টর জেনারেল (পাসপোর্ট) মেজর জেনারেল সোলাইমান আব্দুল আজিজ ইয়াহ ইয়াহ, মেজর জেনারেল খালেদ বিন ফাহাদ আল যুইয়াদ, ডক্টর হুসাইন বিন নাসের আল শাকিত, আলী বিন মোহাম্মদ আল ওতাইবি, মোহাম্মদ বিন ওবায়েদ আল উতাইবি, ব্রিগেডিয়ার সামি বিন আব্দুল্লাহ মুকিম, ইঞ্জিনিয়ার হামাদ বিন ইব্রাহিম আল হাম্মাদ, ড. আব্দুর রহমান আল ইসা, কর্নেল মোহাম্মদ বিন ওমর আল ঘামদি, ড. হামোদ বিন সাদ আল কোয়ারনি, হাসান বিন সাঈদ আল জাহারানি, ফাইহান মাহিয়া আল মাহিয়া, আব্দুর রহমান সাউদ আল মাহিয়া ও ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ বিন নাসের আল হাল্লাফ।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর বরাত দিয়ে সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন জানান, অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের পক্ষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারী, ধর্ম সচিব আনিছুর রহমান, বিমান সচিব মো. মহিবুল হক, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, কাউন্সেলর (হজ) মাকসুদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আগামীকাল (শুক্রবার) বেলা ১১টায় সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের ১৫১৫ কক্ষে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের সৌদি অংশের ইমিগ্রেশন ও অন্যান্য বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। এই সংবাদ সম্মেলনে শাহজালালে ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের অবহিত করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত সৌদি আরব সফরকালে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ সৌদি হজ ও ওমরা বিষয়ক মন্ত্রীকে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের সৌদিতে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বাংলাদেশে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশের বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ২১ মার্চ সৌদির একটি কারিগরি দল বাংলাদেশ সফর করে।