ভাড়াটিয়া সেজে সর্বস্ব লুটের ঘটনায় নারীসহ গ্রেফতার ৮

ডেস্ক রিপোর্ট

গ্রেফতার
গ্রেফতার। প্রতীকী ছবি

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ভাড়াটিয়া সেজে বাসার মালিকদের অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার, টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়া অজ্ঞান পার্টি চক্রের নারীসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।

শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আজ শনিবার গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়।

universel cardiac hospital

গ্রেফতারকৃত এ অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা গত বছরের ২৫ আগস্ট ডেমরার পূর্ব বক্স নগরে বাসার মালিক হাজী আব্দুস ছাত্তার (৭০) ও তার স্ত্রী সাহেরা খাতুনকে (৬০) চেতনাশক ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে জানিয়েছে ডিবির ডেমরা জোনাল টিম।

ডিবি জানায়, শুক্রবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ঈদগাহ মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সীমা (৩০), লিপি (৫০), বেবী আক্তার ওরফে বকুল (৪৮), আমিরন ওরফে আমিরুন্নেছা (৪৮), মুক্তা (৩৬), কুলছুম ওরফে সাথী (২৬) ও মো. মনির হোসেন ওরফে বাবুদের (১৯) গ্রেফতার করা হয়।

তাদের দেয়া তথ্যমতে এদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানা এলাকা থেকে অপর অভিযুক্ত মোছা. তাসলিমা আক্তার মনা ওরফে ময়নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকায় ভাড়াটিয়া সেজে বাড়ি ভাড়া করে মালিক ও তার পরিবারকে চেতনানাশক ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সর্বস্ব লুট করে নিত। এই চক্রটি গত বছর ডেমরা এলাকায় পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক বাসা ভাড়া নেয়।

পরে চেতনানাশক ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে স্বর্ণের কানের রিং, টেবিলে থাকা ছোট দুটি চার্জার লাইট ও দুটি পুরাতন ম্যাক্সি নিয়ে পালিয়ে যায়।

বিকাল ৫টার দিকে বাসার অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা অচেতন অবস্থায় মালিক হাজী আব্দুস ছাত্তার (৭০) ও তার স্ত্রী সাহেরা খাতুনকে (৬০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার দিন তারা কয়েকজন বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে ওই বাসায় যায়। এরপর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বাসার মালিক হাজী আব্দুস ছাত্তার ও তার স্ত্রী-সাহেরা খাতুনের সঙ্গে খাতির জমিয়ে ঘুমের ওষুধ মেশানো শরবত খাইয়ে দেয়।

বাসার মালিক এবং তার স্ত্রী যাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে সেই জন্য বাসার মালিকের মাথায় ও দাড়িতে এবং তার স্ত্রীর মাথায় মেহেদি লাগিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা অচেতন হয়ে পড়লে তারা বাসা থেখে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।

জানা যায়, তারা ইতিপূর্বে ঢাকার বাড্ডা, বরিশাল, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালি, খুলনা, চট্টগ্রামসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় অনুরূপ কৌশল অবলম্ব করে অপরাধ সংঘটন করেছে।

এর আগে গত বছরের ২৭ আগস্ট এ দম্পতি হত্যার ঘটনায় ডেমরা থানায় একটি মামলা রুজু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত শুরু করে। পরবর্তী সময়ে মামলাটির তদন্তভার যায় ডিবির ডেমরা জোনাল টিমের কাছে।

মামলাটি তদন্তকালে বাড্ডা এলাকায় আরেকটি এ ধরনের ঘটনার তথ্য পায় ডিবি। সেখানে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে ও একটি মোবাইলের তথ্য বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে