প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে কওমি মাদ্রাসার দাওরা-মিশকাত পরীক্ষা স্থগিত

বিশেষ প্রতিনিধি

দাওরায়ে হাদিসে পাসের হার ৭৩.৫১
ছবি : সংগৃহিত

আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার অধীনে সারা দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল জামাত) পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় জরুরি এক বৈঠকে আজ শনিবার সিদ্ধান্ত নেয় আল্লামা আহমদ শফীর নিয়ন্ত্রণাধীন আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ।

universel cardiac hospital

হাটহাজারীসহ সব কওমি মাদ্রাসায় সর্বোচ্চ এ জামাতের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

০৮ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কয়েকটি পরীক্ষায় ঢাকার ফরিদাবাদ মাদ্রাসাসহ দেশের কয়েকটি স্থানে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের খবর পাওয়া যায়। এরপরই শনিবার সকালে জরুরি সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি বেফাক বোর্ডের মিশকাত জামাতেরও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।


২৩ এপ্রিল থেকে নতুনভাবে পরীক্ষা নেয়া

আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে নতুনভাবে আবারও এ পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী।

তিনি জানান, শনিবার রাজধানীর মতিঝিলের আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কার্যালয়ে একটি জরুরি বৈঠক হয়। আল্লামা আশরাফ আলীর সভাপতিত্বেই বোর্ডের ওই বৈঠকে পরীক্ষা বাতিলের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হযেছে।

বোর্ডের একাধিক দায়িত্বশীল আলেম জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ায় তাকমিল হাদিসের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা হচ্ছিল।

বেফাকের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক জানান,  যে পরীক্ষাগুলো হয়েছে তা বাতিল করা হয়েছে। আবার নতুন করে পরীক্ষা হবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মুফতি রুহুল আমিন, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা নূরহোসাইন কাসেমী, মুফতি আরশাদ রাহমানী, মাওলানা সাজিদুর রহমান প্রমুখ।

অন্যদিকে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠায় বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের (বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ) চলমান ৪২তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মেশকাত জামাতের (ফজিলত) পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ স্থগিত করেছে বলে সাংবাদিকদের জানান বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মোহাম্মদ আবু ইউসুফ।

তিনি আরও জানান, ফজিলত প্রথম বর্ষে গৃহীত সব পরীক্ষা বাতিল ও অনুষ্ঠিতব্য সব বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করেছে বেফাক কর্তৃপক্ষ।

গত ৮ এপ্রিল থেকে সারা দেশে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ)-এর ৪২তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হয়। এবার সারা দেশে ২৯টি জোনের মাধ্যমে এক হাজার ৪৮২টি কেন্দ্রে, এক লাখ ৫২ হাজার ৩৯৭ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।

প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনে ১৯ সেপ্টেম্বর ‘কওমি মাদ্রাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল)-এর সনদকে আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর অধীনে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান বিল-২০১৮’ পাস হয়।

জানা গেছে, এবার আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে এ পরীক্ষায় দেশের ৬ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২৬ হাজার ৭২১ শিক্ষার্থী এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে