অভিনব কৌশলে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা, গ্রেফতার ৬৫

ডেস্ক রিপোর্ট

অভিনব কৌশলে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা
ফাইল ছবি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক টিম গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অজ্ঞান পার্টির ৬৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।

universel cardiac hospital

আজ শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা জানায়, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন মার্কেট/শপিংমল, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট ও রেলস্টেশন এলাকায় আগত ব্যক্তিদের টার্গেট করে সখ্যতা স্থাপন করে।

এরপর তাদের অপর সদস্যরা টার্গেটকৃত ব্যক্তি ও তাদের সদস্যকে ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্যের আমন্ত্রণ জানায়। টার্গেটকৃত ব্যক্তি রাজি হলে ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য তাকে খাওয়ায় এবং নিজেদের সদস্যরা সাধারণ খাবার গ্রহণ করে।

খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের পর টার্গেটকৃত ব্যক্তি অচেতন হলে তারা তার মূল্যবান দ্রব্যাদি নিয়ে দ্রুত চলে যায়। এক্ষেত্রে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে চা, কফি, জুস, ডাবের পানি, পান, ক্রিম জাতীয় বিস্কিট ইত্যাদি ব্যবহার করে।

এছাড়াও তারা অভিনব কৌশল হিসেবে সাধারণ মানুষকে অজ্ঞান করে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে নিকট আত্মীয়-স্বজনের কাছে ফোন করে বলে সে আমাদের নিকট আটক আছে। তাকে মুক্ত করতে বিকাশ বা অন্যকোনো মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হবে। আত্মীয়-স্বজন ভিকটিমকে মুক্ত করতে টাকা পাঠালে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা টাকা নিয়ে মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে যায়।

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করে সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. আঃ ছালাম মীর, মো. ফালান, মো. মনির হোসেন, সাকিব হোসেন, ইকবাল হোসেন, মো. আফজাল হোসেন আরিফ, মো. মনির হোসেন, মো. সানী, মো. জুয়েল, মো. মিজানুর রহমান, মো. শামিম, মো. বাদল দেওয়ান, মো. সেলিম, মো. আসিফ উল রিন্টু, মো. শাহ আলম, মো. শাহিন, মো. আব্দুর রহমান, মো. রকিব, মো. টিটু, মো. আশ্রাফ, মো. রাশেল, মো. হোসেন, মো. সেন্টু মন্ডল, মো. রিপন সিকদার, মো. হৃদয় মিয়া, মো. মুন্না, মো. সেন্টু মাঝি, মো. আশ্রাফুল, মো. রেজাউল, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. রবিন আহাম্মেদ রাজ, মো. বাবু, মো. মাসুদ আলাম, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. সুমন, মো. রাজু, মো. ফজলে রাব্বী ও মো. সবুজ।

রাজধানীর ফকিরাপুর ও কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. শফিকুল ইসলাম, মো. আলম, মো. ইসমাইল হোসেন চৌধুরী, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. নূরে আলম, মো. শহিদ আলী, মো. রুবেল হাওলাদার, মো. বাবু আকন্দ, মো. আব্দুল মোতালেব, মো. রুবেল মিয়া ও মো. রহমত আলী।

ওয়ারী থানাধীন জয়কালি মন্দির নামক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. জাহেদ, মো. রিয়াজ, মো. জসিম উদ্দিন ও মো. রুবেল।

গুলিস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা দক্ষিন বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. কাওসার মাহমুদ কিরন, মো. আজাদ, মো. জলিল ফকির, মো. মাইনুদ্দিন চিসতি, মো. রিপন হোসেন, মো. রতন ও মো. অনিক হাসান ওরফে শান্ত।

উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পশ্চিম বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. জাকির হোসেন ওরফে ফয়সাল, মো. মাছুদ রানা, মো. মানিক, নুরজাহান ও শ্রাবনী।

গ্রেফতারের সময় অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের নিকট হতে চেতনা নাশক ট্যাবলেট Noctin (5mg), Nitrazepam (5mg)-১৪৪ পিচ, Lexotanil (3mg)-১৮ পিচ, Epitra (2mg)-১৪৮ পিচ, Sedil- ১০ পিচ, Rivotrl (2mg), Pase (2mg)- ৪০ পিচ, Disopan, Clonazepam (2mg), Nix, Rubbing Balm, Dormicum (7.5 mg)- ২০ পিচ,  Milam (7.5 mg)-  ৩০ পিচ এর নীল রংয়ের কৌটা, ঔষধ মিশ্রিত জুস, খেজুর, ০৭টি চোরাই মোবাইলসেট ও ১টি প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়।

এ সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা রুজু হয়েছে।

সূত্র : ডিএমপি নিউজ

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে