প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধে সারাদেশের ৩০ লাখ গণশহীদকে চিহ্নিত করা এখনও সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সারাদেশের ৩০ লাখ বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তথ্য সংগ্রহ করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করতে চলেছে।
জাতীয় সংসদে আজ বুধবার অসীম কুমার উকিলের (নেত্রকোনা-৩) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা জানান, সরকার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব বীর মুক্তিযোদ্ধার তথ্য সংগ্রহ করে ডাটাবেজ প্রস্তুতের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া কেউ যদি বাদ পড়েন তার জন্য আবারও যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। ওই কার্যক্রম সমাপ্ত হলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, তালিকার অংশ হিসেবে বর্তমানে মোট ৫ হাজার ৭৯৫ শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম, ঠিকানা সংবলিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে গেজেটভুক্ত সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ ১ হাজার ৬২৮ জন, গেজেটভুক্ত বিজিবি শহীদ ৮৩২ জন এবং গেজেটভুক্ত শহীদ পুলিশ ৪১৩ জন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় সহযোগীদের দ্বারা নিহত জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীন মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি বিজড়িত গণকবর সংরক্ষণের চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৩৫টি জেলার ৬৫টি স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে, প্রকল্পটির আওতায় ৩৪২টি স্মৃতিস্তম্ভ মেরামত ও পুনর্নির্মাণের কাজ চলমান, মুক্তিযুদ্ধকালীন মিত্র বাহিনীর সদস্যদের অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালে নৃশংসভাবে হত্যার পর দেশে চলতে থাকে অপশাসন এবং দেশ পরিচালিত হয় স্বাধীনতাবিরোধীদের দ্বারা। এর দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নানাভাবে বিকৃত করা হয়েছে।
- নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতেই চাপে আফ্রিকা
- নাশকতা প্রতিহত করতে গোয়েন্দাবাহিনী প্রস্তুত : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করল জাতিসংঘ
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরে নতুন পাঠ্যসূচি প্রণয়নের জন্য জাতীয় পর্যায়ে সুপরিচিত ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. মুনতাসির মামুন, লেখক ও অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা শাহরিয়ার কবির, লেখিকা সেলিনা হোসেনসহ প্রতিথযশা ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি জাতীয় পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে।