আদালতে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে দুই অভিযুক্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সোমবার বিকেলে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর কাছে স্বেচ্ছায় তারা এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়া দুজন হলো এ মামলার এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি অলি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা অভিযুক্ত তানভীর। পরে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এছাড়াও এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হয়ে তিনদিন রিমান্ড শেষে নাজমুল হাসানকে একই আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে আদালত তার পাঁচদিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সাগর ও সাইমুন নামের অপর দুজনকে পুলিশ পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তাদের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আদালত এ আদেশ দেন। আদেশ শুনে আদালত প্রাঙ্গণে থাকা রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ বিষয়ে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি অলি ও হত্যাকাণ্ডেরর ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার তানভীর আদালতে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
এছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা সাগর, সাইমুন ও নাজমুল আহসানকে পাঁচদিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তাদের প্রত্যেকের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদের মধ্যে নাজমুল আহসান আগেও তিনদিনের রিমান্ডে ছিল। তিনদিনের রিমান্ড শেষে আজ আবারও তার পাঁচদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, এ মামলার ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় গ্রেফতার হলেও সে বরগুনা জেলা পুলিশের কাছে পৌঁছায়নি। তাই তাকে আদালতে তোলা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন রিফাতকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।