খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া আরও ১০ দিনের রিমান্ডে

ডেস্ক রিপোর্ট

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া
খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। ফাইল ছবি

অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায় যুবলীগ নেতা ও ইয়াংমেন্স ক্লাবের মালিক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার আরও ১০ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। খালেদ আলোচিত যুবলীগ নেতা ইমাইল হোসেন সম্রাটের (ক্যাসিনো সম্রাট) শীষ্য হিসেবে পরিচিত।

এর আগে অস্ত্র ও মাদক আইনের দুই মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে ছিলেন খালেদ। ওই রিমান্ড শেষে আজ আবারও তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করেন আইনশৃংখলা বাহিনী।

শুনানি শেষে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- খালেদ মাহমুদ নিজ হেফাজতে রেখে অস্ত্র ও মাদক বিক্রি করতেন।

ইয়াংমেনস ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদকে। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের শীষ্য।

পরে আদালতের নির্দেশে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতেই মামলা দুটির তদন্তভার গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগ। রাতেই ডিবি আসামিকে হেফাজতে নিয়েছে।

গ্রেফতার দেখানোর শুনানিতে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা শেখ রাকিবুর রহমান বলেন, র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে আসামি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তার কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও প্রচুর টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে উদ্ধার করা অস্ত্র, মাদক ও অর্থের উৎস সম্পর্কে জানা যায়নি। তাই আসামিকে এ দুই মামলায় গ্রেফতার দেখানো প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত ওই দুই মামলায় আসামিকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

দুই মামলার রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

তার দখলে ও হেফাজত থেকে ইতালির তৈরি একটি কালো রঙের ১২ বোর শটগান, শটগানের ৫৭ রাউন্ড গুলি, ফ্রান্সের তৈরি ওয়ালথার ব্র্যান্ডের ৭.৬৫ পিস্তল, তিনটি খালি ম্যাগাজিন ও পিস্তলের ৫৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা হয় আসামির নিজ নামে করা পিস্তলের লাইসেন্স দুটি যা ২০১৭ সাল পর্যন্ত নবায়ন করা। আর আসামির নামীয় শটগানের লাইসেন্স দুটি যা ২০১৭ সাল পর্যন্ত নবায়ন করা।

এ ছাড়া আসামির একই রুমের দক্ষিণ পাশের দেওয়ালের স্টিলের লকার থেকে ৩টি ছোট নীল রঙের পলিব্যাগে ৫৮৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং মাদক বিক্রির নগদ ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক মুদ্রা যা বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান আনুমানিক সাত লাখ ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা, সিঙ্গাপুরের এক হাজার কারেন্সির ১০টি নোট, ৫০ কারেন্সির একটি নোট, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫০ কারেন্সির নোট দুটি, ১০ কারেন্সির নোট দুটি, সৌদি ৫০০ কারেন্সির নোট চারটি, ১০০ কারেন্সির নোট তিনটি, ৫ কারেন্সির নোট দুটি, ১০ কারেন্সির নোট একটি, ৫০ পয়সা একটি, এক কারেন্সির কয়েন একটি, ভারতীয় ৫০০ কারেন্সির নোট সাতটি, মালয়েশিয়ার ৫০ কারেন্সির নোট পাঁচটি, এক কারেন্সির নোট ছয়টি, ৫০ কারেন্সির নোট আটটি, থাইল্যান্ডের ১০০ কারেন্সির নোট চারটি, ৫০ কারেন্সির নোট একটি, ২০ কারেন্সির নোট দুটি, এক হাজার কারেন্সির নোট ১০টি উদ্ধার করা হয়।

আসামি দীর্ঘদিন নিজ হেফাজতে অবৈধ অস্ত্র রেখে মাদক (ইয়াবা) ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজ করে আসছিলেন বলে জানা যায়। উদ্ধারকৃত অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যের সঙ্গে জড়িত সহযোগী আসামিদের বিষয়ে তথ্য, নাম-ঠিকানা উদ্ধারসহ তাদের গ্রেফতার ও ব্যাপক পুলিশি অভিযান পরিচালনার জন্য আসামিকে রিমান্ডে পাওয়া একান্ত প্রয়োজন। অস্ত্র ও মাদকের এ দুটি মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা করা হয়েছে।

মানি লন্ডারিংসহ বাকি দুই মামলায় আসামিকে এখনও গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়নি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে