রোহিঙ্গা ক্যাম্প বেড়ায় ঘেরা মানবাধিকার লঙ্ঘন : এইচআরডব্লিউ

ডেস্ক রিপোর্ট

রোহিঙ্গা ক্যাম্প বেড়ায় ঘেরা
ফাইল ছবি

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে কাঁটাতারের বেড়া দিতে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছে। কাঁটাতাঁরের বেড়ায় শিবিরগুলোকে ঘেরা হলে সেটি মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে বলে ভাষ্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটির।

মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ঠাঁই হয়েছে কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে। এসব শরণার্থীদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে।

universel cardiac hospital

এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শিবির ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া ও গার্ড টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। এরপরই এইচআরডব্লিউর বিবৃতি এলো।

গত সোমবার ওই বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ বলছে, রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের হলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে মৌলিক অধিকার ও মানবিক প্রয়োজন অস্বীকার করা যাবে না। বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবিত এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী চলাফেরার স্বাধীনতার নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা ও প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তিনি শিবিরগুলোকে কার্যত উন্মুক্ত কারাগার বানাতে চাইছেন। শরণার্থীদের বাইরের বিশ্ব থেকে আলাদা করে বাংলাদেশ সরকার তাদের অর্জিত বৈশ্বিক সুনামকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।

সংস্থাটি দাবি করেছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তার সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে তাদের মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে চলাফেরার স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা হচ্ছে।

এছাড়া এর ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে শিবির থেকে বাইরে বের হওয়া বা জরুরি চিকিৎসা সেবা ও অন্যান্য মানবিক সেবা পাওয়া থেকে তারা বঞ্চিত হবে। কাঁটাতারের বেড়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে শরণার্থীদের চলাফেরার স্বাধীনতার অধিকার ক্ষুণ্ন হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা উদ্বেগজনক। শরণার্থীদের দাবি, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার পরিবর্তে তাদেরকে হয়রানি করছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে কথিত হামলার ধুয়ো তুলে রাখাইনে পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

আগে থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ১২ লাখের বেশি। কক্সবাজারের উখিয়ায় বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে তারা আশ্রয় নিয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে