সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কেজাউরা গ্রামে ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুর নিথর দেহ নাম তুহিন মিয়া। বয়স মাত্র সাড়ে পাঁচ বছর। এ বছরই শিশু তুহিন স্কুলে ভর্তি হয়েছে। রাতে বাবার সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। সকালে ঘুম ভাঙার পর তার স্কুলে যাওয়ার কথা। রাত পোহানোর আগেই খবর ছড়াল, শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে বাড়ির পাশেই কদমগাছের ডালে ঝুলতে দেখা যায় তার নিথর দেহ। শিশুটিকে মেরে ফেলা হয়েছে—দ্রুত খবর রটে যায়। তার দুই কান কাটা। পেটে ঢোকানো বড় দুটি ছুরি। নির্মমতার এখানেই শেষ নয়—তার যৌনাঙ্গটিও কেটে নেওয়া হয়েছে!
দেশে অনেক দিন ধরেই বড়দের পৈশাচিক নির্যাতন ও জিঘাংসার বলি হয়ে আসছে শিশুরা। পিটিয়ে হত্যা, পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যাসহ নানাভাবে নির্দয় আচরণ শিশুদের ওপর চলে আসছে। কিন্তু শিশু তুহিনকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা লোমহর্ষক, অমানবিক এবং নজিরবিহীন।
আর এই লোমহর্ষক ও নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন শিশু তুহিনের বাবা ও চাচা। হত্যার ঘটনায় সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তুহিনের চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার। আদালতে হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেন তারা যা আমাদের ভাষাহীন করে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কচি শিশুটির বীভৎস ছবি ও প্রকাশিত খবর পড়ে আমাদের চোখ ছলছল করেছে, গা শিউরে উঠেছে এবং হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়েছে।
জানা যায়, জমিজমা নিয়ে গ্রামের কিছু মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ আছে শিশুটির পরিবারের। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পরিবারের লোকজনই এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। শিশুর পেটে ঢুকিয়ে রাখা ছুরিতে অপরাধীর নামও উল্লেখ করা হয়েছে।
কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডকেই আমরা সমর্থন করিনা। যারা এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। আমরা উপরোক্ত নির্মম ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।