ইতালির ভেনিসে ভয়াবহ বন্যায় ডুবে গেল পার্লামেন্ট!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডুবে গেল ভেনিস পার্লামেন্ট
ডুবে গেল ভেনিস পার্লামেন্ট। ছবি-সংগৃহীত

‘সমুদ্র-নগরী’ ভেনিস। ইতালির এই নগরীতে নৌযানই যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম। মানুষের ঘরবাড়ি, ব্যাংক, স্কুল-কলেজের অধিকাংশই পানির ওপরে।

তবে সেই ভেনিসেই স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। প্রায় পুরো ভেনিসই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

universel cardiac hospital

নিহত দুজনই পেলাস্ট্রাইন দ্বীপের বাসিন্দা। নিহতদের একজন বাসায় পাম্প চালু করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। অন্যজনের লাশ পানিতে ভাসতে দেখা গেছে।

ইতিমধ্যে ভেনিস নগরীতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তে। খবর বিবিসির

এদিকে জরুরি অবস্থা জারি করার পর ভেনিসের স্থানীয় প্রতিনিধি পার্লামেন্ট ভেনেতো রিজিওনাল কাউন্সিলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

কিছুক্ষণ পরই সেখানে পানি ঢুকে পড়ে। মঙ্গলবার ভেনিসের গ্র্যান্ড ক্যানালে এ ঘটনা ঘটে, যা বিগত ৫০ বছরে প্রথম।

এদিকে বিবিসিকে ভেনিসের মেয়র লুইগি ব্রুগনারো জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাবেই বিশ্বের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণস্থল ভেনিসে এই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এবারের বন্যা গত ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এক টুইটবার্তায় মেয়র ব্রুগনারো বলেন, ৫০ বছরের মধ্যে পানির উচ্চতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। এটি একটি স্থায়ী চিহ্ন রেখে যাবে। এখনই আমাদের কথা শোনা উচিত সরকারের। এগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, যার মূল্য অনেক চড়া হবে।

বিবিসি জানায়, নগরীর ৮০ শতাংশই পানিতে তলিয়ে গেছে। জোয়ারে ভেনিসের ঐতিহাসিক ব্যাসিলিকা, শহরের প্রাণকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক এলাকা এবং সরু গলিপথ পানিতে তলিয়ে গেছে।

১৯৬৬ সালের পর এবার পানির উচ্চতা সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে নগরীর জোয়ার পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।

তাদের হিসাব অনুযায়ী, ভেনিসে এবার পানি সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৮৭ মিটার (৬ ফুট) উচ্চতায় উঠেছে। ১৯২৩ সাল থেকে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর ১৯৬৬ সালে ভেনিসে জোয়ারের পানির উচ্চতা হয়েছিল ১ দশমিক ৯৪ মিটার।

এবারের বন্যায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ভেনিস। ইতিমধ্যে ভেনিসে সরকারের কাছে অনুদান চেয়ে বক্তব্য দিয়েছেন মেয়র লুইগি ব্রুগনারো।

তিনি স্থানীয়দের অনুরোধ করেন, আপনারা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন। যাতে আমরা দ্রুত সরকারি অনুদান পাই।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, গত ৫০ বছরের মধ্যে পানির উচ্চতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠায় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখন পানিতে নিমজ্জিত। পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে অনেকের কাঁচামাল। অনেক ক্যাফে ও রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। রেস্তোরাঁগুলোর চেয়ার-টেবিল পানিতে ভেসে যেতে দেখা গেছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে