রোহিঙ্গা গণহত্যা : মিয়ানমারে সেনাদের কোর্ট মার্শালে বিচার শুরু!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রোহিঙ্গা গণহত্যা : মিয়ানমারে সেনাদের বিচার শুরু!
ছবি : স্ক্রল অনলাইন

রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের সময় নৃশংসতার দায়ে তদন্তের পর সেনাদের সামরিক আদালতে এক বিরল বিচারের আয়োজন করেছে মিয়ানমার।

আজ মঙ্গলবার এ বিচার শুরু হয়েছে বলে দেশটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। এমন এক সময় এই বিচার শুরু হয়েছে, যখন হেগে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার বিচারের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে মিয়ানমার।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

২০১৭ সাল আগস্টে সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গার ঢল নামে প্রতিবেশী বাংলাদেশে। গণহত্যার উদ্দেশ্যে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলে জাতিসংঘের তদন্তে বলা হয়েছে।

বিচ্ছিন্ন পশ্চিম রাখাইনে কয়েকশ গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গ্রামের বৌদ্ধরা। ব্যাপক হত্যা ও গণধর্ষণের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, নিরাপত্তা চৌকিতে হামলাকারী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বৈধ অভিযান চালাচ্ছে তারা।

মুখপাত্র জ মি টু টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার স্থান গু ধার পিয়ান গ্রামে মোতায়েন করা রেজিমেন্টের অফিসার ও সেনারা নির্দেশনা মানার ক্ষেত্রে অক্ষম ছিল।

নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে মিয়ানমার বলছে, গু ধার পিয়ান গ্রামের ঘটনায় জড়িত সেনাদের কোর্ট মার্শালে বিচার চলছে।

গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়াদের বরাতে গ্রামটিতে অন্তত পাঁচটি গণকবর থাকার কথা জানিয়েছে মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস। মিয়ানমার সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক চাপে রয়েছে মিয়ানমার। ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক কোর্ট অব জাস্টিসে আগামী ডিসেম্বরে শুরু হওয়া শুনানিতে অংশ নিতে হেগে যেতে হচ্ছে দেশটির শান্তিতে নোবেলজয়ী নেতা অং সান সুচিকে।

গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পশ্চিম আফ্রিকার মুসলমান প্রধান ছোট্ট দেশ গামবিয়া। এতে ৫৭ সদস্যের ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা ওআইসি সমর্থন জানিয়েছে।

মিয়ানমার বলছে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন উদ্যোগে তার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হচ্ছে। অভিযোগের বিরুদ্ধে একটি নিজস্ব তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।

কিন্তু এ জাতিগত নিধনের ঘটনায় কোনো বিচার হয়নি বললেই চলে। এর আগে ইনদিন গ্রামে ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যার দায়ে সাত সেনা সদস্যকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

কিন্তু এক বছরেরও কম সময় সাজা ভোগের পর গত নভেম্বরে তারা ছাড়া পেয়েছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে