ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামাতে কমিটি গঠন

মত ও পথ প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

ব্যাংকের ঋণের সুদহার এক অঙ্কে (সিঙ্গেল ডিজিট) নামিয়ে আনতে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক।

রোববার সন্ধ্যায় গঠিত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এস এম মনিরুরুজ্জামানকে।

universel cardiac hospital

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম মত ও পথকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

সাত সদস্যের কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারমান্যান কাজী আকরাম হোসেন, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহাবুবুর রহমান, আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সরওয়ার ও এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মেহমুদ হোসেন।

এর আগে আজ  পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আজই  (রোববার) সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে সাত দিন পর প্রতিবেদন দাখিল করবে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী সরকার এক অঙ্কের সুদহারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

অর্থমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এক অঙ্কে সুদহার আগামী বছর জানুয়ারিতে (২০২০) কার্যকর করা হবে।

এক অঙ্ক সুদে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে ব্যাংকগুলোকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা মেনে চলতে একাধিকবার বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি, যাতে সুদটা সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে। এ জন্য ব্যাংকগুলোকে সুবিধাও দিয়েছি। কিন্তু অনেক বেসরকারি ব্যাংক সেটা মানেনি। এবার বাজেটে নির্দেশনা দেওয়া আছে—এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৬ মাসে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া এ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে সরকারি-বেসরকারি মিলে মাত্র ১১টি ব্যাংক। এখনো বেসরকারি খাতের ৩৭টি ব্যাংকের ঋণের সুদহার ১২-২০ শতাংশের ঘরে।

সূত্র জানায়, ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যাংক মালিকরা সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা, বাণিজ্যিক ব্যাংক কর্তৃক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংরক্ষিত নগদ জমা বা সিআরআর সংরক্ষণের হার কমানো এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে স্বল্পমেয়াদি ধারের নীতি নির্ধারণী ব্যবস্থা রেপোর সুদহার কমিয়ে নিয়েছে।

তাদের এসব সুবিধা দেয়ার লক্ষ্য ছিল সুলভ বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিতের মাধ্যমে বিনিয়োগ উৎসাহিত করা। নানা সুবিধা পাওয়ার পর ব্যাংকের উদ্যোক্তারা গত বছরের জুনে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের ঘোষণা দেন এবং একই বছরের ১ জুলাই থেকে এটি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।  গত ১৬ মাসে বেসরকারি ৪১ ব্যাংকের মধ্যে মাত্র তিনটি ব্যাংক এক অঙ্কের ঋণের সুদহার কার্যকর করে। গত বছরই সরকারি খাতের আটটি ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনে।

এদিকে সর্বশেষ গত ৫ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অঙ্কের ঘরে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে