২০২০ সালে সাড়ে ৭ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠাতে চায় সরকার

মত ও পথ প্রতিবেদক

প্রবাসী
ফাইল ছবি

চলতি বছর বিভিন্ন দেশে সাড়ে ৭ লাখ কর্মী পাঠাতে চায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এছাড়া নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও আরও বেশি কর্মী বিদেশে পাঠানোর আশা করছে মন্ত্রণালয়।

আজ রোববার নতুন বছরে সরকারের শ্রমবাজার পরিকল্পনা নিয়ে অভিবাসন বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস (আরবিএম) আয়োজনে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

universel cardiac hospital

মন্ত্রী বলেন, এ বছর আমাদের টার্গেট সাড়ে ৭ লাখ কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান করা। লক্ষ্যমাত্রা এটা হলেও আমরা বিশ্বাস করি এই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হবে।

সদ্য শেষ হওয়া বছরে ৭ লাখ ১ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছিল, যা মন্ত্রণালয়ের কর্মী প্রেরণের লক্ষ্যমাত্রার (৬.৫০ লাখ) চেয়ে প্রায় ৫১ হাজার বেশি।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, বিদেশগামীর সংখ্যা কিছু কমেছে। আমাদের চাহিদা হচ্ছে দক্ষ শ্রমিক, দক্ষ শ্রমিক না নিলে ফেল করবে। টার্গেট হলো দক্ষ শ্রমিক। আমরা দক্ষ শ্রমিক লাখে লাখে কথা বলি কিন্তু দক্ষ হাজারে হাজারে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে জেলাভিত্তিক সবচেয়ে বেশি বিদেশ গমন করেছে কুমিল্লা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল ও ঢাকা এলাকার লোকজন। আর দেশের হিসেবে সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মী গমন করেছে সৌদি আরবে।

মিট দ্য প্রেসে সচিব মো. সেলিম রেজা জানান, ২০১৯ সালে মোট কর্মসংস্থানের মধ্যে দক্ষকর্মী ছিল ৪৪ শতাংশ, আধা দক্ষ ছিল ২০ শতাংশ। আর নারী কর্মীর সংখ্যা ছিল ১.১১ লাখ।

চলতি বছরে নতুন বাজার নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, কম্বোডিয়া, সিশেলস, হারজেগোবিনা, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, চীনে বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণ শুরু করা হয়েছে। এ বছর আরও বেশি পরিমাণে নতুন নতুন দেশে কর্মী প্রেরণে পরিকল্পনা করেছে সরকার। আশা করি ৫ থেকে ৬টি নতুন দেশে শ্রমবাজার খুলতে পারব।

ইস্ট ইউরোপের দেশগুলোকে টার্গেট হিসেবে দেখা হচ্ছে বলেও জানান ইমরান আহমদ।

বন্ধ মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ার মার্কেট অনেক দিন থেকে বন্ধ। ২০২০ সালের মধ্যে এ বাজারগুলো খুলে যাবে। আমি চাই না আগের মতো ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াবে আমাদের কর্মীরা। সরকার যে টাকা নির্ধারিত করে দেবে সেই টাকায় যাবে।

প্রায় দেড় বছরের কাছাকাছি সময় ধরে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য দ্রুততম সময়ে বাজার খোলার বিষয়ে ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে গত ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষ হয়।

ওই বৈঠকে নভেম্বরের ২৪ ও ২৫ তারিখ ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির পরের দফা আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও শেষ সময়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যা দেখিয়ে বৈঠক স্থগিত করে মালয়েশিয়া। পরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বললে এখন পর্যন্ত কোনো আভাস দেয়নি দেশটি।

সম্প্রতি মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের অভিজাত কুদস্ ফোর্সের কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সোলায়মানি নিহতের ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। এই উদ্বেগময় পরিস্থিতি অনেকটা জটিল হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় আগাম কোনো প্রটোকল নিচ্ছে কি না জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আগামীকাল সোমবার আমার মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করব।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে