অভিযান শুরু হচ্ছে বুড়িগঙ্গা-তুরাগের পূর্ণাঙ্গ দখলমুক্তিতে

মহানগর প্রতিবেদক

অভিযান শুরু হচ্ছে বুড়িগঙ্গা-তুরাগের পূর্ণাঙ্গ দখলমুক্তিতে

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডিব্লিউটিএ) ঢাকা নদীবন্দরের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু নদীর তীরভূমি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা পূর্ণাঙ্গভাবে উচ্ছেদ করতে অভিযানে নামছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এ অভিযান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

সংস্থাটির যুগ্ম পরিচালক (ঢাকা নদীবন্দর) এ কে এম আরিফ উদ্দিন মত ও পথকে বলেন, আমরা নদী তীরে পূর্ণাঙ্গ উচ্ছেদ অভিযান চালাব। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে প্রয়োজনীয় পুলিশ পাওয়াটা সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। তাই নির্বাচন শেষে আগামী মাসের শুরুতে আমরা অভিযান শুরু করব।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নদীর সীমানা খুঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। এছাড়া নদীর প্রশস্ততা ও গভীরতা বৃদ্ধির জন্য খনন ও এস্কেভেশন এ ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

আজ শনিবার মিরপুর বেড়িবাঁধের সিন্নিরটেক বিআইডব্লিউটিএ’র ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে সদরঘাট পর্যন্ত নৌপথে তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীতে উচ্ছেদ পরবর্তী চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি কার্যক্রম এবং ঢাকা নদীবন্দর টার্মিনাল পরিদর্শন করেন নৌপরিবহন সচিব মো. আবদুস সামাদ, বিআইডব্লিউটিএ’র বিদায়ী চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব-উল ইসলাম, সদ্য যোগদানকৃত চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেকসহ সংস্থাটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

এ সময় নৌপরিবহন সচিব নদীকে কেন্দ্র করে নেয়া প্রকল্পের উন্নতমান বজায় রেখে প্রকল্পের কাজ আরও ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি নদীর প্রশস্ততা ও গভীরতা বৃদ্ধি, তীরভূমি দখলমুক্ত করণ, দখলদার ও নদী দূষণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নদীর তলদেশ, তীরবর্তী ও ভাসমান বর্জ্য উত্তোলন করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনারও তাগিদ দেন।

এর আগে নদী তীরভূমি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে গত বছরের ২৯ জানুয়ারি অভিযানে নামে সংস্থাটি। বছরব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দখলমুক্ত হয়েছে নদীর ১২১ একরের বেশি জায়গা।

এ সময় উচ্ছেদ করতে হয়েছে চার হাজার ৭৭২টি ছোট বড় স্থাপনা। নদী দখল করে গড়ে তোলা হাউজিং প্রতিষ্ঠানের বিশাল আকারের স্থাপনা উচ্ছেদ এবং তা ড্রেজিং করে পুনরায় সেখানে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। উচ্ছেদে ভাঙা পড়েছে ক্ষমতাসীনদের প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক স্থাপনা।

নদীকে হারানো রূপ ফিরিয়ে দিতে বড় প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে নদী তীরে শত বছরের গ্যারান্টিযুক্ত সীমানা খুঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। একই সঙ্গে দখল করা জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিতে এবং পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে খনন ও এস্কেভেশন এ ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এরপর ওয়াকওয়ে নির্মাণ, সবুজায়ন, ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটির। সংস্থাটির মতে, দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাতে নেয়া এই প্রকল্প শেষ হলে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু নদী এবং শীতলক্ষ্যা নদী তীর হয়ে উঠবে ঢাকাবাসীর বিনোদনের জায়গা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে