জুয়া-ক্যাসিনো বন্ধে সাজা বাড়ানো উচিত: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাইকোর্ট
হাইকোর্ট। ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হওয়া জুয়া-ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে। আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয় এই অভিযানের মুখ্য উদ্দেশ্যে হচ্ছে ক্যাসিনো ও জুয়া খেলাকে নিরুৎসাহিত করা। একইসঙ্গে জুয়া ও ক্যাসিনো বন্ধে আইনে সাজার পরিমাণ বাড়ানো উচিত বলেও মন্তব্য করেন আদালত।

আজ সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করে রায় ঘোষণার সময় এমন মন্তব্য করেন।

universel cardiac hospital

আদালত পর্যক্ষণে বলেন, ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনে ঢাকা মহানগরীর বাইরে জুয়া খেলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এই আইনে সাজার পরিমাণ খুবই নগণ্য। মাত্র ২০০ টাকা জরিমানা ও তিন মাসের কারাদণ্ড। রাজধানী ঢাকা মহানগরীর মধ্যে জুয়া খেললে এই আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মনে করি সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জুয়া আইন বৈষম্যমূলক। কারণ সংবিধানেই বলা হয়েছে আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান। অপরাধ অপরাধই। এখানে ধনী ও গরিবের বৈষম্যের সুযোগ নেই।

এই পর্যবেক্ষণ দিয়ে হাইকোর্ট ঢাকার ১৩ অভিজাত ক্লাবসহ সারাদেশের জুয়া খেলা বন্ধ ঘোষণা করে রায় দেন। একইসঙ্গে ১৩টি অভিজাত ক্লাবসহ দেশের কোথাও জুয়া খেলার কোনো উপকরণ পাওয়া গেলে তা তাৎক্ষণিক জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজীব।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকাক্লাবসহ দেশের ১৩টি ক্লাবে টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা বন্ধে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়।

২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর এ বিষয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ক্লাবগুলো হলো-ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, বনানী ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব গুলশান, চিটাগাং ক্লাব, চিটাগাং সিনিয়র্স ক্লাব, নারায়ণঞ্জ ক্লাব ও খুলনা ক্লাব।

রুলে জুয়া জাতীয় অবৈধ ইনডোর গেম যেমন কার্ড, ডাইস ও হাউজি খেলা অথবা এমন কোনো খেলা যাতে টাকা বা অন্য কোনো বিনিময় হয়ে থাকে তা বন্ধের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চান আদালত।

রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৬, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৮ এবং পাবলিক গেম্বলিং অ্যাক্ট ১৮৬৭ অনুযায়ী কোনো প্রকার জুয়া খেলা দণ্ডনীয় অপরাধ। একইসঙ্গে সংবিধানের ১৮ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারকে পতিতাবৃত্তি ও জুয়া খেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে