ম্যাচ শেষে তর্কাতর্কির ঘটনায় ভারতকে সরি বললেন ম্যাচ রেফারি

বাংলাদেশ
বাংলাদেশ

একদম শুরু থেকেই দেখা গেছে বাংলাদেশ ও ভারতের যুব দলের মধ্যকার জমজমাট ফাইনাল ম্যাচের উত্তাপ। তবে সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যায় ম্যাচ শেষে শিরোপা উদযাপনের সময়। বাংলাদেশ দল যখন পতাকা হাতে উদ্দাম উদযাপনে ব্যস্ত, তখন হুট করেই দেখা গেলো একটা জটলার মধ্যে তর্কাতর্কি ও প্রায় হাতাহাতির অবস্থা দুই দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে।

কোচিং স্টাফদের মধ্যস্থতায় থামে সে দফার ঝগড়া। এর খানিকপরেই দেখা যায়, বাংলাদেশের পতাকা টানছেন ভারতের জার্সি পরা এক খেলোয়াড়। মূলত উদযাপনরত খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পতাকা ছিনিয়ে নেয়াই ছিল উদ্দেশ্য। সে ঘটনা টিভি স্ক্রিনে ধরা পড়তেই সরিয়ে নেয়া হয় ক্যামেরা। তবে তখন যে ঘটেছিল আপত্তিকর কিছু- সে বিষয়ে আর সন্দেহ থাকে না কারোরই।

তবে তখন আসলে ঠিক কী ঘটেছে, তা বলতে পারেননি বাংলাদেশ বা ভারতের অধিনায়ক। এমনকি ভারতীয় দলের টিম ম্যানেজার অনিল প্যাটেলও জানিয়েছেন যে, তারা তখনকার ঘটনা কিছুই দেখেননি। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলি বলেন, ‘আমি জানি না ঠিক কী হয়েছে তখন। আমি জিজ্ঞেসও করিনি সেখান কী হচ্ছে।’

ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোকে একই কথা বলেন ভারতের টিম ম্যানেজার প্যাটেলও। তার ভাষ্যে, ‘আমরা ঠিক জানি না তখন কী হয়েছে। সবাই বিস্মিত ছিলাম। কারণ আমাদের কারোরই জানা ছিলো না সেখানে কী হচ্ছে বা হয়েছে। আইসিসির অফিসিয়ালরা শেষের কয়েক মিনিটের ফুটেজ দেখবে বলে জানিয়েছে। এরপর সোমবার তারা আমাদের এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে।’

ম্যানেজার অনিল প্যাটেল সংবাদ সম্মেলন শেষে আরও জানিয়েছেন, আইসিসি ভারতীয় টিম ম্যানেজম্যান্টকে আশ্বাস দিয়েছে যে, তারা (আইসিসি) ম্যাচের শেষদিকে হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করবে। পরে সেটি দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

আইসিসি নিজ থেকেই ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয়ায় ভারতীয় দলকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে হয়নি। প্যাটেল জানিয়েছেন, এমনটা না হলে ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলা হতো টিম অফিসিয়ালদের সঙ্গে। তবে ম্যাচ রেফারি গ্রায়েম ল্যাব্রয় নিজ থেকেই বলেছেন, এ ঘটনার ব্যাপারে আইসিসির পক্ষ থেকেই তদন্ত করা হবে।

তৌহিদ হৃদয়কে আউট করার পর ভারতীয়দের উদযাপন

একইসঙ্গে আইসিসির প্রতিনিধি হিসেবে ভারতীয় দলের কাছে ম্যাচ শেষে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ম্যাচ রেফারি ল্যাব্রয়। এটি জানিয়ে প্যাটেল বলেন, ‘ম্যাচ রেফারি (গ্রায়েম ল্যাব্রয়) আমার কাছে এসেছিল। পুরো ঘটনার জন্য তিনি দুঃখপ্রকাশ করে সরি বলেছেন। একইসঙ্গে আমাদের জানিয়েছেন যে, এ বিষয়ে আইসিসিও সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। ম্যাচ চলাকালীন এবং ম্যাচের পর যা ঘটেছে- সবকিছুর ফুটেজ আবার দেখবে তারা। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ সোমবার সকালে জানানো হবে বলেছে।’

এদিকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় এক দৈনিকে নির্বাচক কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ দলের সাবেক ফাস্ট বোলার হাসিবুল হোসেন শান্ত জানিয়েছেন, পুরো ঘটনায় দায় ছিলো ভারতের খেলোয়াড়দেরই। এমনকি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেছে ভারতের ক্রিকেটাররা।

তিনি বলেন, ‘ওরা পুরো ম্যাচজুড়েই প্রচুর স্লেজিং করেছে। আমরা জেতার পর তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। আমাদের ক্রিকেটাররা যখন উৎসব করতে শুরু করল, তখনই ওরা এসে মা-বাপ তুলে গালিগালাজ শুরু করে। কত আর সহ্য করা যায়! ছেলেরা সহ্য করতে না পেরে প্রতিবাদ করতে যায়। এতেই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে