নিজ বাসভবনে যেমন আছেন খালেদা জিয়া

বিশেষ প্রতিনিধি

খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

দুইবছরেরও বেশি সময় দুর্নীতির মামলায় সাজাভোগের পর ছয়মাসের জন্য মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেই থেকে আছেন গুলশানে নিজ বাসভবন `ফিরোজা’য়। করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের আশঙ্কায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে তাকে। দলের শীর্ষ নেতারাও তার দেখা পাচ্ছেন না। বাসায় যাওয়া বারণ। তাই দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অভিন্ন প্রশ্ন, কেমন আছেন তিনি?

স্বাস্থ্যের নিয়মিত চেকআপের জন্য ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সুরক্ষা নিয়ে বাসায় যান। ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকেও এসব নিয়ম মেনে যেতে হয় মাঝে সাজে। চিকিৎসক ও তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানসিকভাবে আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো আছেন। স্বাস্থ্যের অবস্থাও স্থিতিশীলতার দিকে। তবে ডায়াবেটিক, বাতের ব্যথার অস্বস্তি ছেড়ে যায়নি তাকে। ওষুধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে।

বেগম জিয়ার সঙ্গে ছায়া হয়ে আছেন গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম আর একজন নার্স।লন্ডনে বসে প্রতিনিয়ত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বড়ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান।

জানতে চাইলে বিএনপি নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কারা হেফাজতে থাকাবস্থা থেকে ম্যাডামের শরীর কিছুটা ভালো। এটাকে স্থিতিশীল বলা যায়। ডায়েবেটিকস কিছুটা উন্নতি হলেও পুরো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পুরোপুরি সুস্থ হতে সময় লাগবে। কোয়ারেন্টিন শেষ হলে হয়তো নতুন চিকিৎসার বিষয়ে চেষ্টা হতে পারে।’

খালেদা জিয়ার শারীরিক বড় সমস্যা হলো বাতের ব্যথা। যে কারণে হাঁটতে পারেন না তিনি। এজন্য ওষুধের পাশাপাশি ‘হটওয়াটার’ থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। ব্যথার রোগীদের জন্য এটা বেশ উপকারে আসে বলে জানান চিকিৎসকরা।

বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, কোয়ারেন্টিনে থাকা খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দেশের এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খবর রাখছেন। গণমাধ্যম থেকে করোনা পরিস্থিতি জেনে তিনিও উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের বাইরে দুজন চিকিৎসক আপাতত চেয়ারপারসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারছেন না। অন্য কেউ এখন অ্যালাউড না।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত সচিব আবদুস সাত্তার বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতির নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন তিনি। তার স্বজনরাও একদম প্রয়োজন না হলে আসছেন না। সবাই নিয়মিত খোঁজ রাখছেন। আর স্কাইপের মাধ্যমে ছেলে, ছেলের স্ত্রী ও নাতনিদের সঙ্গে কথা বলছেন।’

দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান বেগম খালেদা জিয়া। এরপর আরো একটি মামলায় তারা সাজা হয়। শারীরিক অসুস্থতার জন্য পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলে।

এরমধ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানবিক বিবেচনায় মুক্তির আবেদন করলে তাতে সাড়া দিয়ে গত ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে