সালমান শাহ, মৌসুমী, শাবনূর, রিয়াজ, পূর্ণিমা ও শাকিব খান। বাংলা চলচ্চিত্রে নব্বইয়ের দশক এবং তার পর থেকে এরাই দাপিয়ে বেড়িয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগৎ। কামিয়েছেন অনেক অর্থ ও খ্যাতি। কিন্তু এসব তারকাদের কেউই তাদের অভিষেক ছবিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ‘মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার’ বা কোনও ধরনের কোনো পুরস্কার জিততে পারেননি।
তবে কি অভিষেকে আর কেউ জেতেনি এসব পুরস্কার? অবশ্যই জিতেছে। চলচ্চিত্রের বেশ কজন উঠতি তারকা চলচ্চিত্রে নিজেদের অভিষেক ছবিতেই জিতেছেন পুরস্কার। যদিও তারা সেভাবে আলোচিত নয়। তাদের সবাই নারী, একজন কেবল পুরুষ তারকা। চলুন তবে চিনে নেই সেসব ঢালিউড তারকাদের, যারা অভিষেক ছবিতেই নিজেদের ঝুলিতে পুরেছেন বড় বড় সব পুরস্কার।
সিমলা: ১৯৯৯ সালে দেশের স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘ম্যাডাম ফুলি’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন সিমলা। এই ছবিতে ‘সিমলা’ ও ‘ফুলি- একসঙ্গে দুটি চরিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ লাভ করেন। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম অভিনেত্রী, যিনি অভিষেকেই শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ লাভ করেন।
কাজী মারুফ: ২০০২ সালে পরিচালক বাবা কাজী হায়াতের ‘ইতিহাস’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে এসেছিলেন অভিনেতা কাজী মারুফ। প্রথম ছবিতেই শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছিলেন এই নায়ক। পুরুষ তারকাদের কাজী মারুফই একমাত্র অভিনেতা, যিনি অভিষেকেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মতো এত বড় একটি সম্মাননা পেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করলেও তেমন সাফল্য পাননি। বর্তমানে মারুফ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
জাকিয়া বারী মম: ২০০৬ সালে ‘লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার’ সুন্দরী প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন এই অভিনেত্রী। পরের বছর দেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত ও তৌকির আহমেদ পরিচালিত ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ছবির মধ্য দিয়ে তিনি চলচ্চিত্রে পা রাখেন। প্রথম ছবিতেই শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ পান মম। ওই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রিয়াজ। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বর্তমানে টিভি নাটকেও নিয়মিত অভিনয় করেন মম।
বিদ্যা সিনহা মিম: মমর মতো ২০০৭ সালের ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ সুন্দরী প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন বিদ্যা সিনহা মিমও। একই বছর হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ‘আমার আছে জল’ ছবির মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। এই ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য সমালোচকদের রায়ে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ‘মেরিল প্রথম আলো’ পুরস্কার লাভ করেন মম। পরবর্তীতে ‘জোনাকির আলো’ ছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে চিত্রনায়িকা মৌসুমীর সঙ্গে যৌথভাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও জিতেছিলেন মিম।
নুসরাত ফারিয়া: মডেলিং, বিজ্ঞাপনে গ্লামারাস উপস্থিতি এবং ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার কারণে বহু আগে থেকেই পরিচিত নুসরাত ফারিয়া। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ‘আশিকী’ ছবির মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। সে ছবির নায়ক ছিলেন কলকাতার অঙ্কুশ হাজরা। প্রথম ছবিতেই শ্রেষ্ঠ নবাগতা অভিনেত্রী হিসেবে ‘মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার’ জেতেন ফারিয়া। পরবর্তীতে বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করলেও আর কোনো পুরস্কার হাতে ওঠেনি এই নায়িকার।
শবনম বুবলী: নতুনদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নায়িকা শবনম বুবলী। টেভি চ্যানেল বাংলাভিশনের সাবেক এই সংবাদ পাঠিকা আলোচিত শাকিব খানের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে ১০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করে। তাদের প্রেমের গুঞ্জনও রয়েছে। ২০১৬ সালে শাকিবের বিপরীতেই ‘বসগিরি’ ছবির মাধ্যমে অভিনয়ে আসেন বুবলী। পেয়েছিলেন শ্রেষ্ঠ নবাগতা অভিনেত্রী হিসেবে ‘মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার’। এ পর্যন্ত এক ডজনের মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। এর মধ্যে একটি বাদে সবগুলোতেই বুবলীর নায়ক শাকিব খান।