মিয়ানমারে মন্ত্রী-এমপি সবাই সামরিক গোয়েন্দার নজরদারিতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গোয়েন্দার নজরদারি

মিয়ানমারে সাবেক সামরিক একনায়ক সরকারের মতোই বর্তমান সরকারের মন্ত্রী ও এমপিদের সবাই দেশটির সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত গোয়েন্দাদের নজরদারির শিকার হচ্ছেন।

এমনকি একজন মুখ্যমন্ত্রীও এই নজরদারির বাইরে নেই। এ জন্য সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর ওপর ক্ষুব্ধ মন্ত্রীদের অনেকেই।

universel cardiac hospital

নজরদারি বন্ধ করতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।

মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, সাবেক সামরিক শাসনামলের মতোই স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি’র বর্তমান সরকারের প্রত্যেক মন্ত্রীই সেনানিয়ন্ত্রিত গোয়েন্দাদের তীক্ষ্ণ নজরদারিতে রয়েছেন।

বিষয়টি আমলে নিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলন থেকে গোয়েন্দা বিভাগের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বের করে দেন মান্দালয় প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জ মিন্ট মং।

ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

এদিন মিয়ানমারের এক জাতীয় দিবস অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় যোগ দেন জ। মুখ্যমন্ত্রীর এই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের পাশাপাশি ঢুকে পড়েন স্পেশাল ব্রাঞ্চের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও।

অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

তাতে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী জ বেশ ক্ষোভের সঙ্গেই স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্যদের মিটিং রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, ‘এখান থেকে এখনই বেরিয়ে যাও। এখানে তোমাদের কোনো কাজ নেই।’

ওই কর্মকর্তাদের সামনেই তিনি নজরদারির বিষয়টি তোলেন। বলেন, ‘কোনো নজরদারিই গ্রহণযোগ্য নয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের অবশ্যই আচরণবিধি মেনে চলতে হবে।’

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বেশির ভাগ সময়ই সেনা শাসনের অধীনে ছিল মিয়ানমার।

এ সময়ে সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী ব্যবহার করে সরকারবিরোধী কমকাণ্ডের অভিযোগ এনে বহু রাজনীতিক ও অধিকার কর্মীকে জেলে ঢুকানো হয়েছে।

এর মধ্যে ১৯৮৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তৎকালে গণতন্ত্রপন্থী দল এনএলডির বহু নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হয়। সে সময় মান্দালয়ের মুখ্যমন্ত্রী জ মিন্টও জেল খেটেছেন।

সেনা নিয়ন্ত্রিত গোয়েন্দা বাহিনীই বতমানে মিয়ানমার পুলিশ বিভাগের স্পেশাল ব্রাঞ্চ হিসেবে ব্যবহার হতো।

শক্তিশালী সামরিক গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তারা নানা তথ্য সংগ্রহ করত এমনকি বিরোধীদের আটকও করত। এর পরিচালনায় ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল খিন নয়ান্ট। ২০০৪ সালে বাহিনী ভেঙে দেয়ার হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে