গণপরিবহনে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার হলেও স্বাস্থ্যবিধি উধাও!

বিশেষ প্রতিনিধি

গণপরিবহন

মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে আগের ভাড়ায় ফিরেছে গণপরিবহন। গতকাল মঙ্গলবার থেকে করোনা পূর্ববর্তী ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখার বাধ্যবাধকতাও উঠে গেছে।

এদিকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্ত দেয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না বিভিন্ন গণপরিবহনে। ধাক্কাধাক্কি, গাদাগাদি করে যাত্রীরা উঠছে। অনেক বাসকে দাঁড়িয়ে যাত্রী নিতেও দেখা গেছে। এই অবস্থায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয় কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত ২৪ মার্চ থেকেই দেশে গণপরিবহন চলাচল কার্যত বন্ধ করে দেয়া হয়। দুই মাস পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে ৩১ মে থেকে গণপরিবহন ও ট্রেন চালুর অনুমতি দেয় সরকার। তখন বাসে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার শর্তে প্রায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়।

তিন মাস বর্ধিত ভাড়ায় বাস-গণপরিবহন চলার পর মঙ্গলবার করোনাকালের পূর্বের ভাড়ায় চলাচল শুরু করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার থেকে পূর্বের ভাড়ায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও কিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, পরিবহনের চালক-সহকারীকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। বাসে বা গণপরিবহনে আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।

যাত্রীদের কাছ থেকে আগের ভাড়া নেয়ার বিষয়টি বাস্তবায়ন হলেও অন্যান্য শর্ত তেমন মানা হচ্ছে না। আজ বুধবারও রাজধানীতে বিভিন্ন গণপরিবহনে যাত্রীদের ভিড় ও ঠেলাঠেলি লক্ষ্য করা গেছে। অনেককে মাস্ক ছাড়াই এই ভিড়ের মধ্যে মিশে যেতে দেখা গেছে। এছাড়া অনেক বাসের ড্রাইভার-হেলপারকেও মাস্ক ছাড়া চলাচল করতে দেখা গেছে।

পুরানা পল্টনের একটি বেসরকারি অফিসের কর্মচারী চৌধুরী আসিফ মিরপুর থেকে সিটিং বাসে এসেছেন। তিনি জানালেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করেছে বাসটি। তাছাড়া পুরোপুরি আগের ভাড়ায় ফিরেনি বলেও অভিযোগ তার।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাসের চালক ও হেলপাররা। তারা জানিয়েছে, সরকারের নির্দেশনা মেনে তারা আগের ভাড়া নিচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টাও করছেন। তবে সবক্ষেত্রে তা মানা সম্ভব হচ্ছে না বলে স্বীকার করেছেন বিহঙ্গ বাসের চালকের সহকারী খবিরুল খায়ের। তিনি বলেন, ‘আমরা মাস্ক পরলে কী হবে। অনেক যাত্রীই তো মাস্ক পরেন না।’

পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কথা স্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আগামী দুই চার দিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে৷ তবে অধিকাংশ পরিবহনেই ভাড়ার নির্দেশনা মানা হয়েছে৷ সবার সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি, আশা করি সমস্যা থাকবে না৷’

স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি৷’

এদিকে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব খন্দকার মোজ্জামেল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, তাদের হটলাইনে ফোন করে অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে৷ এছাড়া স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছে না।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে