নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবূধকে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান আসামি বাদল এবং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সোহাগের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে নোয়াখালীর একটি আদালত। অপরদিকে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে অস্ত্র আইনের মামলায় নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত রিমান্ডে পাঠিয়েছে। এই ঘটনা দায়ের করা মামলায় দেলোয়ার এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও এর সঙ্গে বাদলের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
মঙ্গলবার বিকালে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগমগঞ্জ আদালতে দুই আসামি বাদল ও সোহাগকে হাজির করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাশফিকুল হক শুনানি শেষে প্রধান আসামি বাদলের দুই মামলায় সাত দিন এবং এক মামলায় ইউপি সদস্য সোহাগকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেগমগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাক আহমেদ আদালতের কাছে প্রধান আসামি বাদলের দুই মামলায় সাত দিন করে ১৪ দিন এবং ইউপি সদস্য সোহাগের এক মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এর আগে গতকাল দুই মামলায় আসামি আবদুর রহিম ও রহমত উল্যার ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
এদিকে মঙ্গলবার বিকালে পুলিশ অস্ত্র আইনের মামলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে দেলোয়ারের তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
রোববার রাত আড়াইটার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয় দেলোয়ারকে। ওই সময় তাকে তল্লাশি করে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে র্যাব। পরে তার তথ্য মতে সোমবার সন্ধ্যায় বেগমগঞ্জে দেলোয়ারের বাড়িতে অভিযান করে র্যাব সাতটি তাজা ককটেল এবং আরও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা একলাশপুর ইউনিয়নের ওই ঘটনায় নয়জনকে আসামি করে রোববার গভীর রাতে মামলা করেন নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ। ঘটনাটি গত ২ সেপ্টেম্বরের হলেও রোববার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ উঠেছে, ভিডিওতে যারা ওই নারীকে নির্যাতন করছে তারা স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও আর সাঙ্গপাঙ্গরা।
ভাইরাল সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, একদল যুবক ওই নারীকে পেটাতে পেটাতে বিবস্ত্র করে ফেলেছে। নিজের আব্রু রক্ষা করতে চেষ্টার পাশাপাশি নারী বারংবার তাদের বাবা ডেকে তাকে নির্যাতন না করার আকুতি জানান। ওই নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, গোপনে সাবেক স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। এরপরই একদল যুবক অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতন করে। ঘটনাটি দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে।