গোল্ডেন মনিরের আরও ৬১০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

গোল্ডেন মনির
গোল্ডেন মনির। ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকার মেরুল বাড্ডা থেকে বিপুল অর্থ, অস্ত্র-মদ ও সোনাসহ গ্রেপ্তার মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের আরও ৬ শত ১০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধানে বিপুল এই অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে বলে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

universel cardiac hospital

যদিও এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে বলেন, অনুসন্ধান চলছে বলে জানি। তবে কি পরিমাণ অবৈধ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে তা পরে বলতে পারব। জানা গেছে, মনির হোসেন স্ত্রী রওশন আক্তারসহ তার পরিবারে অন্যান্য সদস্যস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের সন্ধান মিলেছে। তবে এসব সম্পদ অর্জনে তাদের কোনো বৈধ উৎস নেই।

বাড্ডা, নিকেতন, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা ও নিকুঞ্জে শতাধিক প্লটও ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে দুদক। এছাড়া মনির হোসেনের স্ত্রী রওশন আক্তারের নামে ৪ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার, অবৈধ গাড়িসহ প্রায় ৬১০ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে দুদকের অনুসন্ধানে।

গোল্ডেন মনিরকে গ্রেপ্তারের পর তার ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের তথ্য আছে বলে জানায় র‌্যাব। সেসময় সংস্থাটি আরও জানায় বাড্ডা, নিকেতন, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা ও নিকুঞ্জে দুইশর বেশি প্লট রয়েছে তার।

জানা যায়, শুধু সোনার ব্যবসা নয় বিদেশ থেকে লাগেজ পার্টি যত ধরনের অবৈধ ব্যবসা করে তাদের প্রায় সব কিছুর সঙ্গেই জড়িত এই গোল্ডেন মনির।

জানা যায়, নিজের প্রায় পঁচিশটি ব্যাংক হিসাবে ৪১২ কোটি ২ লাখ টাকা জমা থাকলেও গত অর্থবছরে আয়কর রিটার্নে তার সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন মাত্র ২৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অন্যদিকে গত ১৯-২০ অর্থবছরে গোল্ডেন মনিরের বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন বাৎসরিক আয় ১ কোটি ৪ লাখ টাকা।

এর আগে গত ২০ নভেম্বর মেরুল বাড্ডায় মনিরের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব মনিরকে গ্রেপ্তার করে। পরে ২১ নভেম্বর ওই বাসা থেকে বিদেশি পিস্তল, মদ, বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ এক কোটি নয় লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় ২২ নভেম্বর র‌্যাব বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করে। এই তিন মামলায় ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিমের আদালত মনিরের ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

১৪ দিনের রিমান্ড শেষে মনিরকে ৩ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে তিন মামলায় ফের ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জরি করে ঢাকার মহানগর হাকিম এর আদালত। অস্ত্র মামলায় তিন দিন, বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিন ও মাদক মামলায় তিন দিনের এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর মনির হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে রাজউক ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দুই কাউন্সিলরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে চিঠি পাাঠায় দুদক।

এর আগে ২৬ নভেম্বর গোল্ডেন মনির ও তার স্ত্রী রওশন আক্তারের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে দুদক। দুদক পরিচালক আকতার হোসেন আজাদের স্বাক্ষরে পাঠানো নোটিসে তাদের ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে।

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারে আগে ২০১৯ সালে ৭০টি ফ্ল্যাটের নথি চুরি করে আইনবহির্ভূতভাবে নিজের হেফাজতে রাখায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে