আফগানিস্তানে একের পর এক শহর দখল করে নিচ্ছে তালেবান। রোববার উত্তরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর কুন্দুজ দখলের পর সার-ই পাল এবং তালোকান শহরও তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। কুন্দুজ শহর দখল তালেবানের জন্য চলতি বছরের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের পাঁচ শহর তালেবান দখল করে নিয়েছে। বিবিসি এবং আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দু’পক্ষ এখনও একমত হতে পারেনি। রোববার আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে আফগানিস্তানে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন তালেবানের এক মুখপাত্র।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী জারাঞ্জ দখল করে তালেবান। জারাঞ্জ হচ্ছে ইরান সীমান্তের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক বাণিজ্য কেন্দ্র। এই শহরের চারিদিকের এলাকা দখল করে নেয়ার পর তালেবান আরও সামনে অগ্রসর হতে শুরু করে।
আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার শুরুর পর থেকেই তালেবান সেখানে বেশ দ্রুতগতিতে বিভিন্ন এলাকা দখল করতে শুরু করে। তালেবান এরই মধ্যে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ন গ্রামীন এলাকা দখল করে নিয়েছে। এখন তারা বড় বড় শহর টার্গেট করছে।
গত ১ মে থেকে আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত নিজেদের অধিকাংশ সেনা প্রত্যাহার করেছে দেশটি। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার ২০ বছর হতে যাচ্ছে। এর মধ্যেই দেশটি থেকে সব সেনা সরিয়ে নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
রোববার তালেবান একের পর এক শহর দখল করে নেয়ার পর সেখানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এদিকে আফগান সরকার বলছে, গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে সৈন্যরা লড়াই করে যাচ্ছে। অপরদিকে পশ্চিমের হেরাত, দক্ষিণের কান্দাহার এবং লস্কর গাহ শহরেও তীব্র লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে।
তালেবানের সঙ্গে আফগান সেনাবাহিনীর লড়াই বিভিন্ন শহরের হাজার হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। শিশু, নারীসহ অসহায় বহু মানুষ নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে।
আফগান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মার্কিন সৈন্যরা একত্রিত হয়ে তালেবানের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি এতে বহু তালেবান নিহত হয়েছে। অপরদিকে তালেবানের দাবি, লস্কর গাহ শহরে দুটি হাসপাতাল এবং একটি স্কুলে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।