১৬ ডিসেম্বর বিকাল পৌনে ৫টায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শপথ অনুষ্ঠানের যে ডায়াস দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ বাক্য পাঠ করেছেন সেখানে ‘মুজিববর্ষ’ বানানটি ছিল ভুল। ‘সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শপথ’-এর পরিবর্তে লেখা ছিল ‘সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবর্ষের শপথ’, অর্থাৎ মুজিববর্ষের মাঝখানের একটি ‘ব’ সেখানে ছিল না! একটি ঐতিহাসিক জাতীয় অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের এটি নজরে পড়েনি। দায়িত্বরতদের খামখেয়ালিপনায় সারা বিশ্ব দেখল বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতার বিকৃত নাম! যা খুবই দুঃখজনক! এতদিনের এত পরিকল্পিত একটা প্রোগ্রামের যদি এই হাল হয় তাহলে কি সহজে মেনে নেওয়া যায়? প্রশ্ন ওঠে, কাদেরকে এই অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেয়া হলো আর কারা মনিটরিং করেছে? এমন জাতীয় অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্তদের দায়িত্বশীলতা নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
অবশ্য সেই বানান ভুলের দায়সারা ব্যাখ্যা দিয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। শুক্রবার কমিটির মিডিয়া কনসালট্যান্ট আসিফ কবীর স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে— ‘পোডিয়ামের বানান ভ্রান্তিটির প্রাথমিক খোঁজখবরে যা জানতে পেরেছি, তা হলো— আমরা একটি চিপ-এ পিসি থেকে ট্রান্সফার করে এলইটি মিনি মনিটরে লেখাটি উৎকীর্ণ করেছি। ডিভাইস ট্রান্সফারের কোনো পর্যায়ে একটি ‘ব’ অক্ষর অমিট হয়ে গেছে। আমরা পিসিতে চেক করে দেখেছি এটি ঠিকই আছে।’ কথা হচ্ছে, কতকিছুই ‘অমিট’ হতে পারে, তাই বলে সেই ভুল অনুষ্ঠান শুরুর পরও থাকবে?
আসলে ইভেন্ট আয়োজক নামক ধান্দাবাজদের মাথায় যখন আদর্শের চেয়ে টাকার ধান্দা বেশি ঘুরে তখন ‘মুজিববর্ষ’কে ‘মুজিবর্ষ’লেখা অস্বাভাবিক নাও হতে পারে! তবে এই ভুল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি-না তা খতিয়ে দেখা জরুরি বলে মনে করি। সেইসঙ্গে আমরা গুরুত্বসহকারে এই ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।