ভোটের দিন আমার কাছে চুমু চেয়েছিলেন পীরজাদা হারুন

বিনোদন প্রতিবেদক

সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে বেশ উত্তাল এফডিসি। গত ২৮ জানুয়ারি (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে হেরেছেন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ। আজ রোবার নির্বাচন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে চিত্রনায়িকা নিপুণ বলেন, ভোটের দিন সকালে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন আমার কাছে তার দুই গালে দুটো চুমু (কিস) খেতে বলেছিলেন। ওর দুই গালে চড় লাগানো উচিত ছিল। যেটা আমি করিনি।

তিনি আরও বলেন, সে সময় আমাদের প্যানেলের দুই নারী সদস্য শাহনূর ও জেসমিন সেখানে উপস্থিত ছিল। তখনই উনার গালে চড় দিয়ে আমার ইলেকশনটা বন্ধ করে দেওয়া উচিত ছিল।

universel cardiac hospital

নিপুণ বলেন, এখানে (সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী চিত্রনায়ক) জায়েদ খান, এফডিসির এমডি আর নির্বাচন কমিশনার পীরজদা হারুন একটা চক্র। তারা সবাই মিলে জায়েদ খানকে জিতিয়ে দিয়েছেন। তারা টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন, ভিডিওতে সেটা দেখা গেছে।

তিনি বলেন, আমি আবার শিল্পী সমিতির নির্বাচনে শুধু সাধারণ সম্পাদকের ভোটগ্রহণ চাই। অন্য পদের নির্বাচন চাচ্ছি না। আমি সবকিছুর জন্য উচ্চ আদালতে যাবো। আমাদের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এই নিয়ম আছে শুধু এক পদের ভোট হওয়া।

নিপুণ বলেন, আমি হারিনি, হেরে গেছে বাংলাদেশ। পুরো দেশ থেকে আমি যেই সমর্থন পেয়েছি, তার সামনে জায়েদ খানের চক্রান্ত দাঁড়াতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রীকে এফডিসিতে আসার আহবান জানিয়ে নিপুণ বলেন, এই যুদ্ধটা আমি করেছি, প্রধানমন্ত্রী আপনি এখানে আসুন, এই চক্রকে ধরেন। এই চক্রকে ধরতে না পারলে আমাদের চলচ্চিত্রকে বাঁচানো যাবে না।

কাঞ্চন প্যানেলের এ সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন একটি চক্র, এটা জায়েদ খানের চক্র। এদের সঙ্গে ছিলো এফডিসির এমডিও। আমাদের প্যানেলের বিরুদ্ধে তারা তিনজন মিলে ষড়যন্ত্র করেছে। আমি জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে থানায় জিডি করেছি।

মিশা-জায়েদ পরিষদ নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ করে নিপুণ বলেন, নিয়ম-কানুন কি শুধু কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের জন্য ছিল? মিশা-জায়েদ পরিষদের জন্য ছিল না? আমরা ব্যারিকেড দিয়ে ভেতরে অবস্থান নিয়েছিলাম, কিন্তু জায়েদ খান সেই ব্যারিকেডের ভেতরে আসেননি কেন? তিনি কেন ব্যারিকেডের বাইরে গিয়ে টাকা দিয়ে ভোট কিনলেন?

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সদ্য সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, রিয়াজ, আফজাল শরীফ, সাইমন, জেসমিনসহ কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের অনেকেই।

গত ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে পরাজিত হন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়ে ভোট পুনর্গণনার জন্য আপিল করেন নিপুণ। কিন্তু সেখানেও একই ফলাফল পায় আপিল কমিটি।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৪২৮। ভোট দিয়েছেন ৩৬৫ জন। এর মধ্যে কার্যকরী পরিষদের সদস্যপদে ১০টি আর সাধারণ সম্পাদক পদে বাতিল হয় ২৬টি ভোট।

ভোটে ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন সভাপতি পদে ১৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিশা সওদাগর পান ১৪৮ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ১৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন জায়েদ খান। নিপুণ পান ১৬৩ ভোট।

শেয়ার করুন