গর্ভধারিণী মায়ের প্রতি অতল শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসা জানানোর মধ্য দিয়ে আজ রোববার উদযাপিত হচ্ছে আর্ন্তজাতিক মা দিবস। জীবনের প্রয়োজনে মায়ের কাছ থেকে দূরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সন্তানরা মায়ের খবর নিচ্ছেন বিভিন্নভাবে। যাদের মা বেঁচে নেই, তারা মাকে স্মরণ করছেন নানাভাবে। দেশের ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা লিখছেন মাকে নিয়ে। অনেকে মাকে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন উপহার পাঠাচ্ছেন।
জন্মদাত্রী মা, যার কল্যাণে পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখা হয় সন্তানের। সেই মায়ের স্মরণে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বিশ্ব মা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। যদিও মাকে ভালোবাসা-শ্রদ্ধা জানানোর কোনো দিনক্ষণ ঠিক করে হয় না- তবুও তাকে আরো গভীর মমতায় স্মরণ করার দিন আজ।
গত দুইবছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দিবসটি উদযাপনে দেশে বিশেষ কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিলো না। তবে এবার নানা আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো দেশেও উদযাপন হচ্ছে মা দিবস।
কেক কেটে মা দিবস উদযাপনের প্রচলন এ দেশে এখনো শুরু হয়নি সেভাবে। এর চেয়ে মাকে শাড়ি, গহনা, প্রিয় খাবার ইত্যাদি কিনে দেওয়ার চল বেশি। অনেক দেশে কেক কেটে মা দিবস উদযাপন করা হয়।
তবে মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, তাকে দুই কলম লেখার সময় হয় না। জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারাজীবন ব্যয় করেন অনাথ-আতুরের সেবায়। মেরি ১৯০৫ সালে মারা যান। লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন মেয়ে আনা জার্ভিস।
অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মা দিবস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়।
এবারের আন্তর্জাতিক মা দিবস উপলক্ষে ৩৮ সফল মাকে ‘রত্নগর্ভা মা’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে রত্নগর্ভা মায়েদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। একই অনুষ্ঠানে দেওয়া হয়েছে ‘মাই ড্যাড ওয়ান্ডারফুল’ অ্যাওয়ার্ড। আজাদ প্রোডাক্টস এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ড. সবুর খান, সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসা, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (এন্টি টেররিজম ইউনিট) সালমা বেগম ও ঢাকা ক্লাবের সভাপতি খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল। উদ্যোক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আজাদ প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
৩৮ জনের মধ্যে ১৩ জনকে বিশেষ ও ২৫ জনকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। বিশেষ ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পাওয়া রত্নগর্ভা মা হলেন- হামিদা বেগম, মাহমুদা বেগম, জাহানারা বেগম, সফুরা খাতুন, মাহমুদা খাতুন, মাইমুনা আক্তার খাতুন, মাজেদা বেগম, আশা বড়ুয়া, খালেদা খানম, মাফিয়া বেগম, জাহানারা হোসেন, নাজিমা বেগম ও জান্নাতুল ফেরদৌসী।
সাধারণ ক্যাটাগরির ২৫ মা হলেন- আমেনা বেগম, লতিফা খানম, পুনুয়ারা বেগম, মর্জিনা সাখাওয়াত, সামসুন নাহার, আয়েশা খাতুন, রোকশনা আহম্মেদ, নাফিসা বেগম, ফারমিদা সাত্তার, সেলিমা খাতুন, রেহানা শফিক, অ্যাডভোকেট হাজেরা পারভীন, সুরাইয়া খানম, মাফিয়া আখতার, খোশনূর, পারুল বেগম, নাজমা আনিস, ফরিদা ইয়াসমিন, রওশনয়ারা বেগম, ওয়াজিফা খাতুন, সিদ্দিকা বেগম, শাতিল আবেদা, ফয়জুন্নেছা বেগম, মমতাজ খানম ও মমতাজ বেগম। মাই ড্যাড ওয়ান্ডারফুল পুরস্কার পেয়েছেন চিত্রশিল্পী মুস্তফা মনোয়ার।