ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রয়াত সাংবাদিক এ জেড এম এনায়েতুল্লাহ্ খানের নামে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘এনায়েতুল্লাহ্ খান স্মৃতি ট্রাস্ট ফান্ড’ সমালোচনার মুখে বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, এনায়েতুল্লাহ্ খানের বিরুদ্ধে থাকা সমালোচনার বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি রাশেদ খান মেননের ‘রেফারেন্সে’ আসায় ফান্ডটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়সংলগ্ন লাউঞ্জে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকতা বিভাগে ‘এনায়েতুল্লাহ্ খান স্মৃতি ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের কাছে ২৫ লাখ টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেন এনায়েতুল্লাহ্ খানের মেয়ে নাসরীন জামান। ওই অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রধান অতিথি ছিলেন।
এনায়েতুল্লাহ্ খানের ভাই সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন জিয়া রহমান, সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদ এবং এনায়েতুল্লাহ্ খানের আরেক ভাই আবু সালেহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খানও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ফান্ড গঠনের অর্থের চেক হস্তান্তরের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ অনেকেই সমালোচনায় সরব হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে শিক্ষক, প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ অনেকেই বিষয়টির সমালোচনা করেন। সমালোচনায় শামিল হন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ ও এ এস এম মাকসুদ কামাল, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন সাদেকা হালিম।
তাঁরা বলেন, এনায়েতুল্লাহ্ খান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধিতা করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান শুক্রবার বলেন, ট্রাস্ট ফান্ডের বিষয়টি আমাদের খুব আপনজন সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেননের রেফারেন্সে এসেছিল। আর এনায়েতুল্লাহ্ খানের ব্যাপারে তথ্যগুলো আমাদের জানা ছিল না। তথ্য পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকেলেই এটি বাতিল করা হয়। এটি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল, বাস্তবায়ন হয়নি। এর ট্রাস্ট কমিটিও গঠন হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এ জেড এম এনায়েতুল্লাহ্ খান ইংরেজি পত্রিকা হলিডে ও নিউ এজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তিনি মন্ত্রী হয়েছিলেন। এ ছাড়া কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।
বিএনপির শাসনামলে ২০০৪ সালে সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একুশে পদক পান এনায়েতুল্লাহ্ খান। ২০০৫ সালের নভেম্বরে তিনি প্রয়াত হন।