রাজধানী ঢাকার শাজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সুমন সিকদার মুসা ওমানে আটক হয়েছেন। এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) মাধ্যমে রয়েল ওমান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।
পুলিশ সদর দফতর থেকে সে দেশে মুসা আটকের বিষয়টি জানিয়ে বলা হয়েছে, মুসা ওমানের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছেন।
গত ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০ টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনি থেকে বাসায় যাওয়ার পথে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে মাইক্রোবাসে গুলি করলে টিপু (৫৪) ও পাশের রিকশা যাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি (২০) নিহত হন। এ ঘটনায় ডিবির হাতে গ্রেফতার হয় শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ। তার দেওয়া তথ্য থেকে যুবলীগ নেতা এরফান উল্লাহ দামালকে গ্রেফতার করে ডিবি।
খুনের এক সপ্তাহ পর র্যাব এ ঘটনায় মতিঝিলের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক (৫২), সুমন সিকদার মুসার ছোট ভাই আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ (৩৮), নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির (৩৮) ও মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশকে (৫১) গ্রেফতার করে।
আন্ডারওয়ার্ল্ডের কাছে মুসা একটি ভয়ঙ্কর নাম। আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে যোগাযোগ হয় মুসার। কোটি টাকায় খুনের চুক্তি হলেও প্রথম দফায় শুটার গ্রুপের কাছে ১৫ লাখ টাকা পৌঁছে যায়। এক গ্রুপ গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে রেখে আসে। অতঃপর কাট আউট পদ্ধতিতে শুটার গ্রুপ রেকি করে। সব পরিকল্পনা করে ১২ মার্চ মুসা দুবাই পালিয়ে যায়। সেখানে শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে বসে পরিকল্পনা নেয় খুনের। এর পাশাপাশি ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার যুবলীগের ল্যাংড়া খালেদের সঙ্গেও শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের যোগাযোগ হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত মাসের শুরুর দিকে মুসা দুবাই থেকে ওমানে যান। ওমানে যাওয়ার কয়েকদিন পর সেখানে রয়েল ওমান পুলিশের হাতে মুসা আটক হন। তবে ইন্টারপোল থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাকে রয়েল ওমান পুলিশ আটক করেছে।
পুলিশ সদর দফতরে ইন্টারপোলের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিদুল ইসলাম বলেন, ওমানে মুসার আটকের বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। ওমানে আমরা যোগাযোগ করছি। তাকে আটক করা হয়েছে কি না তা আমরা নিশ্চিত হইনি। তবে সে সেদেশের নজরদারির মধ্যে আছে। ৫-৬ দিন পর এ ব্যাপারে ভালো কিছু রেজাল্ট জানানো সম্ভব হবে।
অপরদিকে, টিপুকে গুলি ছোঁড়া ব্যক্তিকে মোটরসাইকেলে বহনকারী ব্যক্তি মোল্লা শামীম লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। পরে ভারত থেকে তিনি ভুটানে চলে গেছেন। ভুটানে তার অবস্থানের তথ্য পেয়ে পুলিশ সদর থেকে যোগাযোগ শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এ হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মুসা। মুসাকে গ্রেফতার করা গেলে হত্যায় কারা কারা জড়িত তার একটা তালিকা পাওয়া যেত। দুবাইয়ে মুসার পালিয়ে যাওয়ার তথ্যসহ বিস্তারিত তথ্য পুলিশ সদর দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর মুসাকে নিয়ে কাজ করছে।