‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে দায় নিতে হবে’-বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাব দিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, সরকার তার বিরুদ্ধে মামলা করেনি। এক এগারোর সময় মামলা হয়েছে। আদালত দণ্ড দিয়েছে। সরকার কিছু করেনি, তাহলে কেন আমাদেরকে দায় নিতে হবে?
বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শাহ আলী থানার ৮ ও ৯৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হানিফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। রাজনৈতিক কমী হিসেবে আমরা চাই তিনি সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরুক। তবে এটা মানতে হবে তিনি আদালত কর্তৃক দণ্ডিত।
সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়ে কারাগার থেকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত ছিল। সরকার কি বলেছিল, আমরা কি বলেছিলাম এতিমের টাকা আত্মাসাত করতে?
সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে ভোগ বিলাসে মত্ত ছিলো। তাদের লক্ষ্য ছিলো ক্ষমতায় থাকা। যার কারণে দেশের উন্নয়নে, মানুষের কল্যাণে তারা কোনো কাজ করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়ন, অগ্রগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় আসা দরকার।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ভিশনারি লিডার ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বৈষম্যের চিত্র বেরিয়ে আসতে থাকলে সেই সময় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন বাঙালি জাতির জন্য নতুন রাষ্ট্র প্রয়োজন। তিনি স্বাধীন, ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে লড়াই করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, পতাকা, সংবিধান সবই হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পর আজ আমরা প্রধানমন্ত্রী শেক হাসিনাকে দ্বিতীয় ভিশনারি লিডার হিসেবে পেয়েছি। লিডার ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব হয় না। আজ তিনি তা প্রমাণ করেছেন।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন, এক এগারোতে শেখ হাসিনা আপোস করেছিলেন। অথচ বিএনপির হাত ধরে তো এক এগারোর উৎপত্তি হয়েছে। তারা ক্ষমতায় বসেই শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করেছিলো, তাকে কেন গ্রেফতার করা হবে? তিনি তো সেই সময় ক্ষমতায় ছিলেন না।
‘তিনি ক্ষমতা ছাড়ার পর খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছিলেন। ক্ষমতায় থাকতে শেখ হাসিনা যদি অনিয়ম করতেন খালেদা জিয়া কি ছেড়ে দিতেন? এমন প্রশ্ন রেখে হানিফ বলেন, আপষ করলে খালেদা জিয়া করেছেন। শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের কয়েকমাস পর সেপ্টেম্বর শেষ দিকে খালেদাকে গ্রেফতার করা হয়। এতেই প্রমাণ হয় কে আপোস করেছিল।’
ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজু ও সহ-প্রচার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হামিদ।
শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আগা খান মিন্টুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম মোল্লার সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।