প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে (পুরোনো বাণিজ্য মেলার স্থান) স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার। রাজধানীর আব্দুল গণি রোডেই থাকছে সচিবালয়। শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রসংলগ্ন জায়গায় এখন পার্ক বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
রমনা পার্কের মতো সেখানে সাধারণ মানুষের জন্য হাঁটাচলা, খেলাধুলাসহ সব ধরনের সুবিধা রাখা হবে। এ জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বাণিজ্য মেলা পূর্বাচলে স্থায়ী ঠিকানা পেয়েছে। চলতি বছর পূর্বাচলে প্রথমবারের মতো এ মেলা হয়েছে। অন্যদিকে শেরেবাংলা নগরের যে স্থানটিতে আগে বাণিজ্য মেলা হতো, তা কয়েক বছর ধরে খালি পড়ে আছে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে ৩০ একর জায়গা এভাবে খালি ফেলে রাখা যায় না।
দিনে-রাতে সেখানে নানা ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। কেউ গাড়ি পার্কিং করছে, কেউ মেলা বসাচ্ছে। এখান থেকে সরকার লাভবান হচ্ছে না। আব্দুল গণি রোড থেকে সচিবালয় সরছে না, সরকারের শীর্ষ মহল থেকে এমন সংকেত পেয়ে তারা পুরোনো বাণিজ্য মেলার স্থানটিতে পার্ক বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, খালি জায়গায় পার্ক বানাতে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আমরা একটি প্রকল্প তৈরি করেছি। পার্কে ওয়াকওয়ে থাকবে। ছোট-বড় সবার জন্য খেলার ব্যবস্থা থাকবে। থাকবে জলাধার। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য আমরা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাব।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বেশ কয়েকবার শেরেবাংলা নগরে সচিবালয় স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়। এ জন্য দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। চার লাখ ডলার খরচ করে বিশ্বখ্যাত মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের জাতীয় সংসদ ভবনসহ পুরো শেরেবাংলা নগরের মূল নকশা দেশে আনা হয়েছিল।
নকশা অনুযায়ী, শেরেবাংলা নগরে ১৪ তলার ভিতের ওপর ৯ তলাবিশিষ্ট চারটি মূল ভবন করার কথা ছিল। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় মিলনায়তন, সম্মেলন কেন্দ্র, মসজিদ, ব্যাংক, ডাকঘর, এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কিন্তু এসব পরিকল্পনা থেকে সরে আসছে সরকার।