‘বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে হবে’

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত। জীবনবাজি রেখে আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ করেছে, পরম আত্মত্যাগ স্বীকার করেছে। আমরা উভয় দেশ সব দিক থেকেই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। যদিও অর্থনৈতিক এবং ভৌগোলিক দিক থেকে ভারত একটু বড় দেশ। তারপরও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নয়ন ও সাম্প্রদায়িকতা-ধর্মান্ধতা রুখতে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে হবে।

শুক্রবার রাতে কলকাতার পিয়ারলেস ইন হোটেলে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালিদের যোগসূত্র বাড়ানোর সংগঠন ‘বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শনিবার কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের আদর্শ নিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেদিন থেকে এখনও পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এসব আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি। ধর্মনিরপেক্ষতা-অসাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে কোনও আপস করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, সবসময়ই অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। কিন্তু দেশে বিএনপিসহ কিছু দল রয়েছে, যারা ক্ষমতায় আসার জন্য সবসময়ই ধর্মকে ব্যবহার করে।’

বাঙালি বিশ্বে অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাতি হতে পারে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের বাঙালিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী একসঙ্গে থেকেছে। এখন বাস্তবতার কারণে দুটি দেশের— ভৌগোলিক অবস্থান ও রাষ্ট্রীয় পরিচয় ভিন্ন হলেও বাঙালির চিন্তা-চেতনা, খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচরণ, ভাষা-সংস্কৃতিসহ প্রায় সবকিছুই এক ও অভিন্ন। সেজন্য, আমরা বাঙালিরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে বিশ্বে বাঙালিরা অন্যতম শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে পরিণত হতে পারে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড’র সভাপতি এবং কলকাতা ও মুম্বাই হাইকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। এসময় বাংলাদেশের অতিথিদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, ব্যারিস্টার আমীর-উল- ইসলাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, বিশিষ্ট সাংবাদিক স্বদেশ রায়, কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পবিত্র সরকার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর।

কলকাতা থেকে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, বিচারপতি সমরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রখ্যাত আইনজীবী বিমল চ্যাটার্জী, আইনজীবী ও সংসদ সদস্য বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

শিক্ষাবিদদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— ড. পবিত্র সরকার, অধ্যাপক শোভনলাল দত্তগুপ্ত, দিল্লির শিব নাদার ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্সের অধ্যাপক আশিস ভট্টাচার্য, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহউপাচার্য অধ্যাপক অশোক রঞ্জন ঠাকুর, নেতাজী সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মণিমালা দাস, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অধ্যাপক পার্থ ঘোষ প্রমুখ।

শেয়ার করুন