বছর শেষে পুতিনই এগিয়ে

মত ও পথ ডেস্ক

ভ্লাদিমির পুতিন
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি

২০২৩ সালটা অনেক উচ্চাশা নিয়ে শুরু করেছিল ইউক্রেন। দখল করা এলাকা উদ্ধারে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান আশা দেখাচ্ছিল কিয়েভকে। কিন্তু সেই ‘আশার গুড়ে বালি’। বছরের শেষে এসে দেখা যাচ্ছে, নিজেদের ভূখণ্ড পুনর্দখল তো হয়নি, বরং যুদ্ধের ময়দানে বেশ কোণঠাসা ইউক্রেনের সেনারা।

ইউক্রেনীয় বাহিনীর কাছে এখন রুশ বাহিনীকে মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র নেই। এ নিয়ে খোদ সেনাপ্রধানসহ শীর্ষস্থানীয় কমান্ডাররা অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন। আর এই অস্ত্রের ঘাটতি কবে পূরণ হবে, তা–ও এখন অনিশ্চিত। খবর বিবিসির।

universel cardiac hospital

যুদ্ধের জন্য পশ্চিমাদের ‘অব্যাহত’ সমর্থনেও ‘ফাটল’ ধরেছে। ‘কেন শত শত কোটি ডলার ইউক্রেনকে দেওয়া হবে’—এ প্রশ্ন উঠেছে পশ্চিমা দেশগুলোতে। এ যুদ্ধে ‘ইউক্রেনের লক্ষ্য কী’, তা–ও জানতে চাইছেন অনেক দেশের নেতারা। আর এ কারণে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ায় ‘লাগাম টেনে ধরেছেন’ তারা।

তবে বছরের শুরুতে পুতিনের রাশিয়াকে দেখে ‘ব্যাকফুটে’ আছে মনে হলেও দখল করা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে গত বছর অবস্থান সংহত করেছে রুশ বাহিনী। সম্মুখযুদ্ধে রুশ বাহিনীর সঙ্গে ‘পেরে ওঠা যাচ্ছে না’—এমন কথা বলছেন ইউক্রেনের সেনা কমান্ডাররাই। ইউক্রেনের ‘মনোবল ভাঙার’ কথাও উঠেছে।

বছরের শুরুতে পুতিনকে কিছুটা উদ্বিগ্ন মনে হলেও এখন তিনি আত্মবিশ্বাসী। বছর শেষের সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেছেন, যে লক্ষ্যে এ যুদ্ধে ‘রাশিয়া জড়িয়েছে’, তাতে এখনো তারা অবিচল। এই লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত শান্তি নয়।

বিবিসির ভাষ্যমতে, সবকিছু পরিকল্পনামতোই চলছে, এমন ‘মন্ত্র’ জপে বছর শুরু করেছিলেন পুতিন। যদিও অনেক ক্ষেত্রে সব ঠিকঠাক চলছিল না। যুদ্ধের ময়দানে অনেক জায়গায় পিছু হটতে হচ্ছিল রুশ সেনাদের। রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ও ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী গোষ্ঠী ভাগনারের মধ্যে বিরোধও প্রকাশ্য হয়ে উঠছিল তখন। যুদ্ধের মাঠে পিছিয়ে থাকায় পুতিনের জনপ্রিয়তাও দিন দিন কমেই চলেছিল।

তবে শুরুর দিকের ‘ভুল’ শুধরে নিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ায় রাশিয়া। নতুন করে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলের বদলে দখলে থাকা ভূখণ্ডে অবস্থান সংহত করার লক্ষ্য নেয়। তাই কিছু জায়গা ছাড়া বছরজুড়ে বড় ধরনের লড়াই হয়নি।

যদিও এ বছরই দেশে বড় একটি বিদ্রোহের মুখে পড়তে হয়েছিল পুতিনকে। ভাগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের সশস্ত্র এই বিদ্রোহ পুতিনের ‘সর্বময়’ ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল। তবে ‘গোয়েন্দা পুতিন’ শক্ত হাতে বিদ্রোহ দমন করেছেন। অবশ্য এ জন্য নিজের সবচেয়ে অনুগত যোদ্ধাদের মধ্যে একজন প্রিগোশিনকে ‘কোরবানি’ দিতে হয়েছে তাঁকে।

শেয়ার করুন