আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগুন সন্ত্রাস করে ভোট উৎসব ম্লান করা যাবে না, যেসব নেতারা এসব ঘৃণ্য ও জঘন্য কাজের নির্দেশদাতা তারাও সমান অপরাধে অপরাধী। জনগণের দাবি হচ্ছে, ভদ্রবেশি সুবেশধারী এসব নেতাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করার। যদি আমরা সরকার গঠন করতে পারি, আমাদের প্রধান কিছু কাজের মধ্যে অন্যতম প্রধান হবে আগুন সন্ত্রাসীদের মূলোৎপাটন করা। একটি সভ্য দেশে এসব চলতে দেওয়া যায় না।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেনের ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়ে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন নিয়ে সমস্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচণ্ড আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সে জন্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, সার্কভুক্ত এবং ওআইসিভুক্ত দেশগুলো থেকে শুরু করে অনেক দেশ ও সংস্থা নির্বাচনি পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে বিধায় তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য ব্যাপকহারে পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে। আশা করছি, আগামীকাল (৭ জানুয়ারি) দেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিকভাবে সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধস নামানো বিজয় হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।
তিনি বলেন, গতকাল ঢাকার গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসের চারটি বগিতে বিএনপি-জামায়াতের দুস্কৃতিকারীরা আগুন দিয়েছে। যেভাবে এই বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে এতে এ পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিএনপি-জামায়াত ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যেভাবে অগ্নি-সন্ত্রাস চালিয়েছিল, ঠিক একইভাবে বর্বরোচিত হামলা তারা গত ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে।
গতকাল ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনার পর বিএনপি একটি আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করেছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, সমস্ত ঘটনা ঘটিয়ে অস্বীকার করা বিএনপির অভ্যাস। ইতিপূর্বেও একই এলাকায় ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মা ও শিশুসহ চারজন একসঙ্গে মৃত্যুবরণ করেছে। ওই এলাকায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস সাহেবের বাড়ি। এর আগের ঘটনা কার নির্দেশে, কারা করেছে, সবাই গ্রেপ্তার হয়েছে, তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আগুন সন্ত্রাসের ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায়। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট হচ্ছে, নাশকতা করার পর এগুলোর ছবি তোলা এবং ভিডিও করা হয় এবং সেগুলো লন্ডনে পাঠানো হয়। সেগুলো পাঠালে নাশকতাকারীদের দলে পদোন্নতিসহ নানাভাবে পুরস্কৃত করা হয়। এটি কোন রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না।
তিনি বলেন, নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে যারা পুড়িয়ে হত্যা করে, তারা দেশ, জাতি-সমাজ ও মানুষের শত্রু। বিএনপি-জামায়াত আজকে দেশ, জাতি-সমাজ ও মানুষের শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। তারা গতকাল শুধু ট্রেনে হামলা চালিয়েছে তা নয়, ঢাকায় গাড়িতে আগুন দিয়েছে, বগুড়ায় চলন্ত ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করেছে, হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে, রাজশাহী মহানগরে একটি ভোট কেন্দ্রের পাশ থেকে ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে, তার আগের রাতে দুটি ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে। চট্টগ্রামেও নাশকতার ঘটনা ঘটাচ্ছে। তারা চেষ্টা করছে, এগুলো করে নির্বাচনে যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, সেই পরিবেশকে নষ্ট করার জন্য।
দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিহত করতে জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জনগণের শক্তির কাছে অপশক্তি, দুষ্কৃতিকারীরা কখনো পেরে ওঠে না, তারা অতীতেও পরাজিত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। আমাদের সরকার ও দল এই দুষ্কৃতিকারীদের মূলোৎপাটন করতে বদ্ধপরিকর। তারা জনগণের শত্রু, জনগণের শত্রুদেরকে জনগণকে নিয়েই প্রতিহত করা হবে।