চরম সীমায় পৌঁছে গেছে গাজা দুর্ভিক্ষ। তীব্র খাদ্য সংকটে নাজেহাল অবরুদ্ধ অঞ্চলটির। জমি-জমা নেই, মজুত রাখা খাবার শেষ, বেকারিগুলোও বিধ্বস্ত। আবার খাবার পেলেও জ্বালানি সংকটে নেই রান্নার ব্যবস্থা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও মেলে না ত্রাণের খাবার। যদিও ভাগ্যক্রমে পাওয়া যায়, তা নিতান্তই সামান্য। পেট ভরে না। ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে এবার পশু-পাখির খাবার খাচ্ছেন অবরুদ্ধ অঞ্চলটির অসহায়, নিরীহ বাসিন্দারা। বেঁচে থাকার জন্য ময়দার বিকল্প হিসাবে পশুখাদ্যকে পিষে খাচ্ছেন অনেকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অ্যাকশনএইডের এক বিবৃতিতে গাজার চলমান দুর্ভিক্ষের এ করুণ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান, আনাদুলু এজেন্সি ও আল জাজিরার।
ইসরাইলিদের বিধ্বংসী আক্রমণে চরম দুর্দশায় পড়েছেন গাজার ফিলিস্তিনিরা। কিছুদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে হেশট্যাগ ‘গাজা স্টারর্ভিং’ ট্রেন্ডে উঠে। সেখানে প্রকাশ করা ভিডিওগুলোতে দেখা যায় হৃদয়বিদারক দৃশ্য।
অ্যাকশনএইড প্যালেস্টাইনের অ্যাডভোকেসি রিহাম জাফারি বলেছেন, আমরা এমন পরিবারের কথা শুনেছি, যারা সারাদিনের জন্য নিজেদের মধ্যে এক টুকরো রুটি ভাগ করে খেয়েছেন। অনেকেই পশুখাদ্য পিষে খাচ্ছেন। আবার অনেকেরই নোংরা-দূষিত পানি পান করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই এবং এর ফলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
দাতব্য সংস্থাগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজার ৯৭টি বেকারির মধ্যে মাত্র ১৫টি এখন কার্যকরী। এগুলোর মধ্যে সবগুলোই দক্ষিণে, উত্তরে কোনো বেকারি চালু নেই। খোলা থাকা বেকারিগুলোতে খাবারের দামও বেশি, যা অনেকের সাধ্যের বাইরে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনওসিএইচএ অনুসারে, ৭ অক্টোবরের পর আগের চেয়ে পানির স্তর এক-দশমাংশের নিচে নেমে গেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলি আক্রমণে গাজায় অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতদের ৮৫ শতাংশ মানুষ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের সংকটে রয়েছেন। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম অনুসারে, গাজার ৩৩৫,০০০ শিশুর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি কেউই পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে না।