দাপট দেখিয়ে পার্থে সিরিজের প্রথম টেস্ট জিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ২৯৬ রানে ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে অজিরা। জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে বক্সিং ডে’টেস্টে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চায় অস্ট্রেলিয়া।
তবে সিরিজ বাঁচাতে বক্সিং ডে’টেস্টে জয় ছাড়াই অন্য কিছুই ভাবছে না নিউজিল্যান্ড। ইনজুরির কারণে প্রথম টেস্টে না পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে পেসার ট্রেন্ট বোল্টকে পেয়ে উচ্ছসিত কিউইরা। তাই সিরিজে সমতা আনার ব্যাপারে আশাবাদী নিউজিল্যান্ড।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্ট শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায়।
বক্সিং ডে টেস্টে বোল্টের দিকেই চেয়ে আছে নিউজিল্যান্ড শিবির। সাইড স্ট্রেইন ইনজুরির কারণে পার্থে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলতে পারেননি তিনি। ৩০ বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মত বক্সিং ডে’টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর লক্ষ্যে বোল্টকে দলে পেতে আশাবাদী নিউজিল্যান্ড।
দলে ফিরতে ফিটনেসের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে বোল্ট। এমনকি ম্যাচের আগে নেটে কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে ম্যাচের জন্য নিজেকে ফিট করে তুলেছেন তিনি। বর্ষপঞ্জির অন্যতম জনপ্রিয় তারিখে দলের হয়ে টেস্ট খেলার ব্যাপারে আশাবাদী বোল্ট।
১ লাখ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মেলবোর্নের বিশেষ বক্সিং ডে টেস্টের আগে রিপোর্টসকে বোল্ট বলেন, আমি সত্যিই এ ম্যাচটি খেলতে চাই কেননা টেস্ট আঙ্গিনায় এ ম্যাচটির গুরুত্ব অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, এটি এমন একটি জায়গা যেখানে খেলার জন্য সকলেরই স্বপ্ন থাকে। এটি আমার জন্য ভালো সুযোগ। তাই এই ম্যাচটি দিকে আমি চেয়ে আছি। আমি যদি পুরোপুরি ফিট থাকি এবং নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তত করতে পারি, তাহলে এই ম্যাচটির জন্য অপেক্ষা করতে পারছি না।
ক্রিকেটে সবচেয়ে ঐতিহ্যপূর্ণ ম্যাচ ও জনপ্রিয় মাঠে খেলার দেখার জন্য নিউজিল্যান্ডের সমর্থকরা ইতোমধ্যে টিকিটের বড় অংশ কিনে নিয়েছে। তাই ক্রিকেটপ্রেমিরা মেলবোর্ন স্টেডিয়ামের কানায়-কানায় পূর্ণ থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে। টিকিটের চাহিদা পূরণের জন্য অকল্যান্ড-মেলবোর্নের মধ্যে অতিরিক্ত ফ্লাইটের সূচি রাখা হয়।
১৯৮৭ সালে সর্বশেষ বক্সিং ডে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলো নিউজিল্যান্ড। বর্তমান স্কোয়াডের অনেকেরই জন্মের আগে ছিল ঐ টেস্ট। কিংবদন্তি বোলার রির্চাড হ্যাডলি দুর্দান্ত বোলিং নৈপুণ্যে ম্যাচটি ড্র করেছিল নিউজিল্যান্ড।
মেলবোর্নের পিচ কেমন হবে তা অজানা। কারণ বিপদজ্জনক পিচের কারণে কয়েক সপ্তাহ আগে শেফিল্ড শিল্ডের একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। অপ্রত্যাশিত বাউন্সের কারণে ব্যাটসম্যানদের খেলতে সমস্যা হচ্ছিলো। যা মোটেও কাম্য ছিলো না ব্যাটসম্যানদের। তাই ঐ গ্রাউন্ডের কিউরেটর ম্যাট পেজ এখানে নতুন পিচ করার জন্য কাজ করেছেন।
এ দিকে পার্থ টেস্টে ইনজুরিতে পড়েন অস্ট্রেলিয়ার পেস অ্যাটাকের অন্যতম ভরসা জশ হ্যাজেলউড। সর্বশেষ তিন টেস্টের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মত হ্যাজেলউডকে ছাড়া বক্সিং ডে টেস্ট খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। তাই হ্যাজেলউডের পরিবর্তে মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সের সাথে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণে থাকবেন জেমস প্যাটিনসন।
অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার বলেন, আমরা জানি, প্যাটিনসন দলে কি নিয়ে আসে। সে অনেক শক্তি-ভালো গতি এনেছে। মেলবোর্নে সে অনেক ম্যাচ খেলেছে।
অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের সাথে ড্র’র পর নিজেদের মাঠে তিন টেস্ট জিতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। তাই অসিদের থামাতে নিজেদের সেরাটা উজার করে দিতে প্রস্তুত নিউজিল্যান্ড।
অস্ট্রেলিয়ার জয়ে প্রধান ভূমিকা রাখেন পেসার স্টার্ক ও স্পিনার নাথান লিঁও। পাশাপাশি তিন নম্বরে ব্যাট হাতে চমক দেখিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম কনকাশন সাব মার্নাস লাবুশেন। পার্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন লাবুশেন। টানা তিন সেঞ্চুরি ছিল সেটি। দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন তিনি।
- ভারতীয়রা সিএএ-এনআরসি-এনপিআর নিয়ে বিভ্রান্তিতে
- সাধারণ ক্ষমা : শেষ মুহূর্তে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশনে অবৈধ অভিবাসীদের ঢল
‘বক্সিং ডে’ টেস্টের আগে ডেভিড ওয়ার্নারকে নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল অস্ট্রেলিয়া শিবিরে। অনুশীলন চলাকালীন নেট সেশনে হাতে বলের আঘাত পান তিনি। পরবর্তীতে তার চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। তবে অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার জানিয়েছেন, ‘বক্সিং ডে’ টেস্ট খেলার জন্য ওয়ার্নার ফিট।
তিনি বলেন, ‘মাত্র দু’সেকেন্ডের জন্য আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। এরপর চিকিৎসক দেখানোর পর আবারও ব্যাটিং শুরু করেন সে। এ টেস্ট খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তত ওয়ার্নার।
বোল্ট বলেন, ধৈর্য্য ও ধারাবাহিকতা নিউজিল্যান্ডের প্রধান অস্ত্র। মূলত আমি মনে করি, এটি সকল ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদি আমরা ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারি এবং তাদের চাপে রাখতে পারি, তবে সেটাই হবে সেরা পথ।
অস্ট্রেলিয়া দল
টিম পেইন (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, জো বার্নস, মার্নাস লাবুশেন, স্টিভ স্মিথ, ম্যাথু ওয়েড, ট্র্রাভিস হেড, জশ হ্যাজেলউড, মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জেমস প্যাটিনসন, নাথান লিঁও, মাইকেল নেসার ও পিটার সিডল।
নিউজিল্যান্ড দল
কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টড অ্যাস্টল, টম ব্লানডেল, ট্রেন্ট বোল্ট, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, লোকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, টম লাথাম, হেনরি নিকোলস, জিত রাভাল, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, রস টেইলর, বিজে ওয়াটলিং ও নিল ওয়াগনার।