নুসরাত হত্যা : লেনদেনকারীদের খোঁজে সিআইডি, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বোরকা উদ্ধার

বিশেষ প্রতিনিধি

নুসরাত জাহান রাফি
নিহত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির লেখা চিঠি। ছবি : সংগৃহিত

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যাকাণ্ডে অবৈধ অর্থ লেনদেনের সঙ্গে জড়িতদের ধরতে কাজ করছে। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। 

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম একথা জানান।

universel cardiac hospital

মোল্লা নজরুল বলেন, সম্প্রতি নুসরাত হত্যাকাণ্ডে অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগসংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এ বিষয়টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কিংবা ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোনো অবৈধ লেনদেন হয়েছে কি না, কিংবা কে বা কারা এসব লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সেসব বিষয় খতিয়ে দেখতে কাজ শুরু করছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট।

নজরুল ইসলাম বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডে অনেকে টাকা ইনভেস্ট করেছেন। কেউ কেরোসিন কিনে দিয়েছেন। কেউ বোরকা কিনে দিয়েছেন। আবার কেউ এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য টাকা পয়সা ইনভেস্ট করেছেন। সুতরাং সিআইডি যেহেতু মানিলন্ডারিং দেখে থাকে সেখানে অবৈধ টাকার লেনদেন হয়েছে কি না সেটা আমরা খতিয়ে দেখি।

নুসরাত হত্যায় ব্যবহৃত বোরকা উদ্ধার

এদিকে, নুসরাতকে আগুনে দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ব্যবহার করা একটি বোরকা উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত টিম।

শনিবার দুপুরে পৌর শহরের সরকারি কলেজ সংলগ্ন ডাঙ্গি খাল থেকে বোরকাটি উদ্ধার করা হয়। পিবিআইয়ের একটি সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্রটি জানিয়েছে, নুসরাত হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার জোবায়েরকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পিবিআই। অভিযানের নেতৃত্ব দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম। জোবায়েরের দেয়া তথ্যানুযায়ী ডাঙ্গি খাল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বোরকা উদ্ধার করা হয়।

কিলিং মিশনে অংশ নেয়া পাঁচজনের মধ্যে ছিল জোবায়েরও। ইতিমধ্যে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মামলাটির অন্যতম আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম জানিয়েছে- নুসরাতে মেঝেতে শুইয়ে ফেলার পর নুসরাতের ওড়না দুই টুকরো করে হাত ও পা বেঁধে ফেলেন জোবায়ের। জাভেদ তখন রাফির সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয়।

এরপর শাহাদাত হোসেন শামীমের চোখের ইশারায় জোবায়ের তার পকেট থেকে দিয়াশলাই বের করে কাঠি জ্বালিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর পাঁচজনই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যায়। নামতে নামতেই তিনজন ছাত্র তাদের বোরকা খুলে শরীর কাপড়ের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলে। ছাত্রী দু’জন মাদ্রাসায় তাদের পরীক্ষার কক্ষে চলে যান। আর বাকি তিনজন নিজেদের মতো করে পালিয়ে যায়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে