শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহের ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৩ কার্যদিবসেই দেশের দরপতন হয়। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৪ হাজার কোটি টাকার ওপরে।
গত সপ্তাহে বাজার মূলধনের পাশাপাশি বাজারটির সবকটি মূল্যসূচকের পতন ঘটলেও বাড়ে লেনদেনের পরিমাণ।
জানা যায়, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ২ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
জানা যায়, ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ১০২টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে দাম কমেছে ২২৬টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির দাম।
বেশরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭৮ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ৯৬ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮০ শতাংশ।
অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ১০ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ২৯ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ১০ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ২৯ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এদিকে সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয় ৫১৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৯২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৫৯৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৪৬৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১৩৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৮৩ দশমিক ৬১ শতাংশই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এ ছাড়া বাকি ১০ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত, ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের এবং দশমিক ৭৭ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৯৫ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেএমআই সিরিঞ্জের শেয়ার লেনদেন হয় ৭০ কোটি টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ৪৮ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- ড্রাগোন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং, নিউ লাইন ক্লোথিং, নূরানী ডাইং, মুন্নু সিরামিক, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং বিবিএস কেবলস।